(জীবনের গল্প)
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
#প্লেবয়
লেখা : নীলা মনি গেস্বামী
পর্ব :২
নতুন নতুন মেয়ে পটাতে বেশ ভালোই লাগে আসাদের। মেয়েগুলোও কেমন যেনো হাবাগোবা ধরনের। একটু মিষ্টি কথাতেই পটে যায়।অন্ধের মতো বিশ্বাস করে ফেলে মেয়েগুলা।দুহাতে টাকা ওড়ায় আসাদের পেছনে।এইতো কিছুদিন আগে ইপ্সিতা নামের একটা মেয়েকে পটিয়ে ফেলেছে সে।সহজ সরল নীরিহ একটা মেয়ে।একটু পাগলাটে ধরনের। খুব বেশী কষ্ট করতে হয়নি মেয়েটাকে পটাতে।প্রথমে ভালোমতে দেখে নিলো ওর প্রোফাইলটা। জেনে নিলো ওর পছন্দ অপছন্দ।তারপর শুরু করে দিলো চ্যাটিং।হাসিখুশি ইপ্সিতার সাথে এক মূহুর্তেই ভাব জমে যায় আসাদের।এক সময় কায়দা করে ওর ছ্যাঁকা খাওয়ার গল্পটা শুনিয়ে দেয় ইপ্সিতাকে। হালকা পাতলা কান্নার অভিনয়ও করে ফেলে আসাদ।ব্যাস... মন গলে যায় ইপ্সিতার।সবার সাথেই এমন করে আসাদ।নিজের দুঃখের কাহিনী শুনিয়ে সিম্পেথি নেয় আসাদ।তারপর ধীরে ধীরে পটিয়ে ফেলে নির্বোধ মেয়েগুলুকে।সাতদিনের মাথায় আসাদকে প্রপোজ করে বসলো ইপ্সিতা।মনে মনে একটু হেসে নিলো আসাদ।নিজের জোগ্যতার ওপর অনেক গর্ব হচ্ছে ওর। " দেখ ইপ্সিতা, তুই তো সব জানোস। আমার পাস্ট রিলেশানের অভিজ্ঞতা খুবই বাজে ছিলো।কোন মেয়েকে বিশ্বাস করতে পারি না আমি।রিলেশানে যেতে ভয় পাই। হারানোর ভয় অনেক।তোকে অনেক পছন্দ আমার।আমি ভালোবাসতে চাই তোকে।আরও ধীরে ধীরে জানতে চাই। একটু সময় দিবি আমাকে? " আবেগ জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো আসাদ।
মৃদু হেসে মেনে নিলো ওর কথা ইপ্সিতা।
এক সপ্তাহ পর....
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়।দূরে কোথাও আজান দিচ্ছে।নিরিবিলি পার্কের রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে আছে ইপ্সিতা।আসাদের জন্য অপেক্ষা করছে।কেমন যেনো ভয় ভয় করছে ওর।এই প্রথম একা বাইরে এসেছে ইপ্সিতা। তাও সান্ধ্যাবেলা। ঢাকায় নতুন।রাস্তাঘাটও চিনে না ভালো মতো।ভয়ে চোখে পানি চলে এসেছে ওর।হঠাৎ দূরে আসাদকে দেখলো। দ্রুত চলে এলো ওর সামনে।
" সরি, দেরি হয়ে গেলো অনেক। " হাঁপাতে হাঁপাতে বললো আসাদ।
কঠিন কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো ইপ্সিতা।মাঝপথে থেমে গেলো।
বৃষ্টি শুরু হয়েছে হঠাৎ।ঝুমবৃষ্টি।ম্যাজিকের মতো ইপ্সিতার মনটা ভালো হয়ে গেলো।বৃষ্টি ভীষন পছন্দ ইপ্সিতার।কেমন যেনো ভাবুক হয় যায় বৃষ্টির দিনগুলোতে।বাবার হাত ধরে কত বৃষ্টিতে ভিজেছে ইপ্সিতা।বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে আইসক্রিম খেতো ছোটো ইপ্সিতা।বাবাটা বড্ড অন্যরকম ছিলো।ইপ্সিতার মতোই পাগলাটে ছিলো ওর বাবাটা।দুজনের বেশ জমতো। তারপর একদিন কি থেকে কি হয়ে গেলো। হারিয়ে গেলো ইপ্সিতার বাবাটা।চোখে পানি চলে এলো ইপ্সিতার।চোখ বন্ধ করে ফেললো সে। মন ভরে বৃষ্টির ঘ্রান শুষে নিতে লাগলো।ছোট্টখাট্টো একটা শোড়গোল কানে এলো।চোখ খুলো তাকালো ইপ্সিতা।দুটো বাচ্চার সাথে কদম ফুল নিয়ে দরদাম করছে আসাদ।কিনে নিলো একথোকা কদমফুল। দৌড়ে চলো গেলো বাচ্চাদুটো।কাছে এসে চুলে পড়িয়ে দিলো কদমের গুচ্ছ।আলতো করে ওর ঘাড়ের পেছনে মৃদু করে একটু হাত বুলিয়ে দিলো আসাদ।চমকে উঠলো ইপ্সিতা।শির শির করে উঠলো ওর শিরা উপসিরা। কেমন ঘোড়লাগা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আসাদ।সে চোখে নিজের সর্বনাশ দেখতে পেলো ইপ্সিতা।দ্রুত ওকে কাছে টেনে নিলো আসাদ।নাকে নাক লেগে গেলো ওদের।আহাদের ণিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছে সে। শক্ত করে ধরে আছে ওর চুলের মুঠো। হঠাৎ করেই বুঝতে পারলো ওকে কিস করতে চাইছে আসাদ।
পাথর হয়ে গেলো ইপ্সিতা।ভয় পেয়ে গেছে মেয়েটা একদম।নাকমুখ খিঁচে রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে। এমন পরিস্হিতিতে কি করতে হবে,জানে না সে। জীবনে প্রথম এমন হলো।মাঝপথে থমকে গেলো আসাদ।বিস্ময় জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো," তুই আগে কখনও কিস করিসনি? "
"না" মিন মিন করে জবাব দিলো ইপ্সিতা।
হা হা করে এলাকা কাঁপিয়ে হেসে উঠলো আসাদ।আর লজ্জায় কুঁকড়ে গেলো বেচারি ইপ্সিতা।
চলবে..........
BINABASA MO ANG
প্লেবয়
Romanceআসাদ বিশ্বপ্রেমিক। যাকে তাকে ভালোবাসা বিলিয়ে দিতে ভীষন ভালোবাসে সে। আজ একে ভালোবাসে, কাল অন্য আরএকজনকে। এভাবেই চলছিলো তার দিনগুলো। তারপর????