অনেকদিন ধরে এতগুলো রোমাঞ্চকর গল্পের বই টানা শেষ করার পর একটা শখ জেগে উঠেছিল।লেখকের বই তো অনেক পড়া হলো,এবার আমার লেখাও কেউ পড়ুক, আমিও লেখক হতে চাই।যেমন ভাবা তেমন কাজ।গল্প হতে হবে হিমুর মতো অসাধারণ চরিত্র, পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। ডাকাত বা চোর আসবে, বিপদ কে খুব নিখুঁত কৌশলের সাথে পার করবে সেই প্রধান চরিত্র।তবে চরিত্রটা কি মেয়ে হবে কি ছেলে?নাহ!মেয়েই হোক।মেয়েদের নিয়ে অ্যাডভেঞ্চারের গল্পগুলো চ্যালেঞ্জিং বেশি হয়।এই সমাজ তো মেয়েদের কে উদ্ভট আচরণ করতে দেয় না,তাই না? ওই মুহুর্তে গাঁজাখুরি চিন্তা করছিলাম,এক সময় আমার লেখা হিট হবে, হাতের কাছে কলম আর চলবে অটোগ্রাফ।আমার হবে দিশেহারা সুখী মানুষের ভাব, আমি কতো ফেমাস একদিন ভেবে কুল পায় না!!! তবে লেখা শুরু করার আগেই এসব ভাবছি আমি?
ধুর!,কি বাজে ভাবছি।শেষমেশ লেখা শুরু করলাম।এক মোটা ৬ দিস্তার খাতা দিয়ে শুরু করলাম, যেটা আম্মু আমাকে অন্তরীকরণ এর নোটের জন্য কিনে দিয়েছিলেন। হুশিয়ার পর্যন্ত করেছিলেন, যেন আজে বাজে গল্প লিখে খাতার ১২ টা না বাজিয়ে দিই,নইতো আমার ১২ টা বাজবে।এক সেট কলমের জন্যেও সেই হুশিয়ারিপণা জারি করেছিলেন।কিন্তু আম্মু বোঝে না,কলম লেখার জন্য তৈরি, সেটা লেখা হোক বা গণিত। ছোটবেলা থেকেই এমন অভ্যাস ছিলো যে মুখের কথা বলার থেকে লিখে প্রকাশ করতে ভারি মজা পেতাম।যা মন চাই লিখতাম, যা ফিলিংস ছিল, মুড ছিল লিখতাম। বেচারা খাতা যতটা গালি গিলেছে, সেই হিসেবে মানুষ অনেক শান্তিতেই আছে।
তখন সকাল ৯ টা বরাবর।জানালার পাশে কড়া রোদ উকি দিচ্ছে। ভ্যাপসা গরম।মাত্র গোসল করে বসলাম কিন্তু ঘেমে কাহিল।মাথার ডান পাশে একটু টনটনে ব্যাথাও লাগছে।এবার হাতের কাছের নীল কলমটা নিয়ে (কালো কলমটা খুজে পাচ্ছিলাম না) লেখা শুরু করলাম ঝড়ের গতিতে।হাত কালিতে ভরে গিয়েছিল,ছোপ ছোপ দাগ লেগে অস্থির।কিন্তু যেমনটা ভেবেছিলাম, মাস্টারপিসের কিছুও হলো না,বরং বিরক্ত লাগছিল।এক পৃষ্টা লিখতে না লিখতেই গল্প ফ্লপ লাগা শুরু করে,ছিড়ে ফেলে দিই ট্র্যাশকেনে। আবার লিখি, আবার পছন্দ হয় না, আবার ফেলে দিই। আরেকটু হলে মিনি ট্র্যাশকেনটা ভরেই যেতো,কিন্তু কলমের কালী শেষ, পেইজটাও অর্ধেক পূর্ণ, সেটাও পছন্দ হয়নি। তবে ফেলেদিলাম না, আতকে উঠলাম।ওমা, কোন ফাকে ১:২০ বেজে গেছে। এতক্ষণ ধরে লিখছিলাম?
YOU ARE READING
কিছু শব্দের গল্প..
Short Storyনূপুর-চুড়ির আওয়াযে,অলিতে গলিতে,বইয়ের ২ পৃষ্ঠার ফাঁকে, নীরবতার প্রহরে,কয়েক সেকেন্ডের চোখাচোখি কিংবা ভাজ পড়া উড়োচিঠির শব্দে যে গল্পগুলো জেগে ওঠে, এটি তাদেরই গল্প।