শাওয়ার নিচ্ছিল মিতি। ভারী শরীর নিয়ে কাজটা করা মোটেও সহজ নয়। তবে মাথাটা ঝিমঝিম করছিল।শাওয়ার থেকে যখন বেরুল তখন মাগরিবের আজান দিচ্ছে। কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে ফ্রিজ থেকে কাচা মাংস বের করতে গেল৷ রাতে বিরিয়ানী করার ইচ্ছে আছে। দুটো টুকরো বিড়ালটার জন্যেও বের করে রাখল। ফুয়াদ বলেছে কাল ফেলে দিয়ে আসবে। বেশ ভালোই লাগছে মিতির। গত কয়েকদিন ফুল প্রোটিন ডায়েট পেয়ে ভালোই মোটাতাজা হয়েছে বিড়ালটা।মাংসগুলো সিংকে রেখে ঘুরে দাড়াতেই দেখল বিড়ালটা দাঁড়িয়ে আছে। সাবধানে দুপিস মাংস নিয়ে বেসিনের নিচে ফেলে দিল। বিড়ালটা দুরুদুর করে চলে গেল।আবার নিজের কাজে মনোযোগ দিল মিতি। সবজি কাটতে কাটতে দেখে বিড়ালটা একদম কাছে চলে এসেছে। মিতি ভয় পেয়ে গেল। কিছু একটা ঠিক নেই। হাতে আরও দুটো মাংস নিয়ে দূরে ছুড়ে মারল কিন্তু বিড়ালটা ভ্রূক্ষেপও করল না। মিতি বেসিনের দিকে তাকালো। আগের মাংসগুলো ওভাবেই পরে আছে।টিক! টিক! টিক! টিক! টিক! টিক! টিক! টিক! টিক!মিতির ভয় পেতে লাগল আবার। বহুদূর থেকে ভেসে আসছে শব্দটা। কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে বিড়ালটা থেকেই আওয়াজ আসছে।একদৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল মিতি। দরজা লাগিয়ে মোবাইল খুজতে লাগল। ফুয়াদকে কল করা দরকার।"হ্যালো, হ্যালো ফুয়াদ-""কী হয়েছে মিতি? তুমি এভাবে কথা বলছ কেন?""ফুয়াদ তারাতারি এস, ওটা আমার ক্ষতি করবে ফুয়াদ। ওটা-""আচ্ছা আমি আসছি। তুমি ভয় পেয় না। আমি আসছি।"ফট করে একটা আওয়াজ হল আর চারপাশে সব অন্ধকার হয়ে গেল। মিতি হাসফাস করতে লাগল। মিতি দরজায় পিঠ দিয়ে বসে ছিল। এমন সময় আচড়ের শব্দ হতে লাগল। যেন কেউ কয়েকটা ধারালো ছুড়ি দিয়ে দরজায় আঘাত করে চলছে!শব্দ বাড়তে লাগল৷ সাথে টিকটিক শব্দও। দরজার লক ভেঙে মাটিতে পড়ে গেল। মিতি একলাফে বিছানায় যেয়ে উঠল। হাতে কিচেন নাইফ তখনো ধরা। যা হবার হবে, তবে মিতি দমে যাবে না। খুন করে ফেলবে বিড়ালটাকে। নিজের বাচ্চার ক্ষতি কোনোমতেই হতে দেবে না। শরীরকে ডিফেনসিভ ভঙ্গিতে করে খাটে দাঁড়িয়ে রইল মিতি। ডান হাতে ছুড়ি।ক্যাচক্যাচ করে দরজাটা খুলতে লাগল। ধীরে ধীরে। বাইরে থেকে আসা পূর্ণিমার আলোয় মিতি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে বেশ বড় একটা অবয়ব ভেতরে ঢুকছে।অবয়বটার সাথে বিড়ালের কোনোই সাদৃশ্য নেই!লম্বা বিশাল লেজ। সামনের দুটো পা দৃষ্টিকটুভাবে বড়। শরীরে খাজকাটা। এবং মুখ!মুখটা দেখে মিতি পাথরের মত জমে গেল। মুখের ভেতর থেকে বের হয়ে রয়েছে লম্বা জ্বিভের মত কিছু একটা। প্রাণীটা মিতির উদ্দেশ্যে লাফ দিল।মিতি হাতের ছুড়িটা সামনে আনল, যার ফলে প্রাণীটার বুকে বেশ বড় একটা জখম করে বিধে থাকল। হিংস্রতার ক্ষিপ্রতায় সামনের এক পা দিয়ে মিতিকে আঘাত করল। মিতির মনে হল তার পাজর ভাঙ্গার আওয়াজ শুনতে পেল।জন্তুটা তার সামনের দু'পা দিয়ে মিতির দু'হাত ধরল এবং পেছনের দু'পা দিয়ে মিতির দু'পা ধরে রাখল। মিতি একবিন্দুও নড়তে পারছে না। দাত দিয়ে কামড়ে মিতির শরীরের কাপড় ছিন্নভিন্ন করে ফেলল জন্তুটা। যেন এক অদম্য নেশায় পেয়ে বসেছে তাকে৷লকলকে জ্বিভটা মিতির যোনীর মাঝে প্রবেশ করালো। মিতি অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠল! জ্বিভ ভেতরে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, আর মিতির শরীরের ভেতর যেন সব পুড়ে যাচ্ছে।সহসাই এক ঝটকায় জ্বিভটা বের করে আনল জন্তুটা। একমূহুর্তের জন্য মিতির মনে হল আকাশ কাপিয়ে শিশুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে কোথাও৷ পরমূহুর্তেই তা মিলিয়ে যেয়ে হাড় কুড়মুড়ের শব্দ হতে লাগল। জন্তুটা নিচে দেয়ালের কাছে খেতে ব্যস্ত।মিতির সন্তান খেতে ব্যস্ত!মিতির জগৎ যেন হঠাৎই মিলিয়ে গেল। ভাবলেশহীন চেহারায় কোনো কান্না নেই, ভয় নেই। সে উঠে দাড়ালো। পিছন থেকে ছুড়ি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল জন্তুটার ওপর।
YOU ARE READING
আসওয়াঙ্গ (হরর)
Horror" লকলকে জ্বিভটা মিতির যোনীর মাঝে প্রবেশ করালো। মিতি অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠল! জ্বিভ ভেতরে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, আর মিতির শরীরের ভেতর যেন সব পুড়ে যাচ্ছে। সহসাই এক ঝটকায় জ্বিভটা বের করে আনল জন্তুটা"