491 14 0
                                    


মিতি সাধারণত এই সময়টা একটু ঘুমিয়ে নেয়। ফুয়াদের অফিস শেষ করে ফিরতে ফিরতে রাত দশটা বেজে যায়। তাই হাতের টুকিটাকি কাজ সেরে আটটা থেকে দশটা নিজের সপ্তমাসী অন্তঃসত্ত্বা শরীরটা বিছানায় এলিয়ে নেটফ্লিক্স দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যায় মিতি।

তবে আজ ঘুমোতে পারেনি। টিভিতে একটা পিনোই মুভি দিয়েছিল, টিকটিক না কী যেন নাম, বাপরে! কী ভয়ংকর! ফুয়াদ শুনলে ভীষণ বকবে। প্রেগন্যান্সির সময় কী করা যাবে আর কী করা যাবে না সে ব্যাপারে রিসার্চ করে করে পণ্ডিত হয়ে গেছে ও। চুপচাপ বসে ছিল মিতি। ফুয়াদ আজ একটু বেশিই দেরী করছে না? হঠাৎই কলিং বেল বেজে উঠল। সাবধানে পা ফেলে দরজার কাছে পৌছে ফুটো দিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে দরজা খুলে দিল। "আসসালামু আলাইকুম হাসবেন্ড!" "ওলাইকুম আসসালাম ওয়াইফ! দেখ দেখ আমি কী এনেছি!" বড় কাগজের ঠোঙার ভেতর থেকে একটা কালো কুচকুচে বিড়াল বের করল ফুয়াদ। "দেখ, আমাদের বাসার সামনে বসে ছিল। পেট দেখেছ কেমন চেপে রয়েছে, ভাবলাম বাসায় এসে হাড্ডিগুলো খেতে দেই।" মিতির অবস্থা বিমূঢ়। এত কিউট একটা বিড়াল নিয়ে খুশি হবে নাকি আবার বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হবে বুঝতে পারছে না। "ফুয়াদ, তুমি নিশ্চিত এ ব্যাপারে? মানে প্রেগন্যান্সির সময় বিড়াল, কোনো ক্ষতি-" "আরে তুমি কী ভেবেছ আমি তোমার ক্ষতি হয় এমন কিছু করব? আমি খোজ নিয়েছি, এসময়ে বাসায় একটা পোষা প্রাণী মা ও শিশু উভয়ের জন্যেই ভালো। ইম্যুউনিটি বাড়ে। আর আমিতো অফিসে চলে যাই, সারাদিন তুমি বাসায় বসে বসে বোর হও নয়তো টিভিতে উল্টাপাল্টা মুভি দেখ, তারচে' ভাল একটা সঙ্গী থাকল তোমার। কী বল? ঠিক বলেছি না? তুমি টেবিলে যেয়ে বসো, আমি ওকে দুইপিস মাংস দিয়ে আসছি।" মিতি কিছুক্ষণ ঠায় দাড়িয়ে থাকে। বিড়াল তার খুব পছন্দের তবে এই বিড়ালটা কীরকম যেন। ঠোঙা থেকে বের করার পর থেকেই মিতির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল। সে জানে না কেন, তবে অশুভ একটা অনুভূতি হতে থাকে তার।

আসওয়াঙ্গ (হরর)Where stories live. Discover now