১
দরজায় ঠকঠক শব্দ হচ্ছে। শীতুলের পড়নে হাফপ্যান্ট। গোসলে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো এমন সময় দরজায় কেউ কড়া নাড়লো। শীতুল একটা তোয়ালে কোমরে জড়িয়ে দরজার কাছে এসে বললো, 'কে?'ওপাশ থেকে হোটেল বয় এর কণ্ঠ শোনা গেলো, 'স্যার, শরবত টা নিন।'
শীতুল দরজা খুলে শরবতের গ্লাস হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত গলায় বললো, 'ওয়াও, আনারসের শরবত!'
- 'স্যার, যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে কল করবেন।'শীতুল দরজা লাগিয়ে দিয়ে ঢকঢক করে শরবত খেয়ে নিলো। তারপর গোসলে ঢুকতে যাবে এমন সময় আবারো দরজায় ঠকঠক শব্দ। শীতুল একা এই হোটেলে উঠেছে, কাজেই ওর রুমে হোটেল বয় ছাড়া আর কারো আসার প্রশ্ন নেই। এবার তোয়ালে ছাড়াই দরজা খুলে মাথা বের করে দিলো শীতুল। দরজার ওপাশে একজন সুন্দরী হাস্যজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে আছে। শীতুল যথাসম্ভব চেষ্টা করলো নিজেকে দরজার পেছনে আড়াল করার। মুখটাও দরজার আড়ালে ঢেকে জানতে চাইলো, 'কি চাই এখানে?'
মেয়েটা স্পষ্টগলায় বললো, 'আমি ভেতরে আসতে পারি?'
- 'না না, পারেন না।'মেয়েটি থতমত খেয়ে বললো, 'আমার দরকার আছে, ভেতরে আসতেই হবে।'
- 'আগে বলুন কি দরকার?'
- 'একচুয়েলি এই রুমে আমি ছিলাম। কিছুক্ষণ আগেই রুমটা চেঞ্জ করেছি। আমার একটা জিনিস খুঁজে পাচ্ছি না। যদি কাইন্ডলি একটু..'শীতুল মেয়েটার মুখের উপর দরজা আটকিয়ে দিয়ে বললো, 'ওয়েট এ মিনিট।'
দ্রুত কোমরে তোয়ালে পেঁচিয়ে দরজা খুলে দিয়ে বললো, 'আসুন।'
মেয়েটা এতক্ষণে ভালোভাবে খেয়াল করলো শীতুলের চেহারা। নিষ্পাপ বিশুদ্ধ মুখশ্রী। চোখে মুখে শুভ্রতা লেগে আছে। গায়ের রং দেখে মনেহচ্ছে গরুর দুধে কাঁচা হলুদ ও জাফরান মেশানো। সেই রংয়ের উপরে কালো খোঁচা খোঁচা দাড়ি দেখে অভিভূত হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো মেয়েটি। চোখে পানি এসে গেলো ওর। বুকের ভেতর দ্রিম দ্রিম করে হাতুরি পিঠতে লাগলো। হঠাৎ করে এরকম আবেগী হয়ে পড়ার কারণ বুঝতে না পেরে মাথা নিচু করে ফেললো মেয়েটা।
মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে শীতুলের অস্থির লাগতে শুরু করেছে। কেন যেন মেয়েটাকে সেই চিঠির মেয়েটা মনেহচ্ছে। যার চিঠি পড়ে পাগলের মত অবস্থা হয়ে গেছের শীতুলের। যখন উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করতে যাবে, তোমার নাম কি শ্যামলতা? তার আগেই মেয়েটা বললো, 'হাই, আমি শ্রবণা।'