151 9 1
                                    

বিকালের দিকে নিশাদের  বাড়িতে গেলাম। বরাবরের মতো ও বাড়ির সবার মন খারাপ। আন্টির মুখটা দেখলে খুব মায়া হয়। সন্ধ্যার দিকে নিশাদের বাড়ি থেকে বের হলাম। আজকে নিশা বেঁচে থাকলে ২৭ বছরে পা দিতো। ঠিক সাত বছর আগে নিশা ওর জন্ম দিনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিল। সেদিন নিশার সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী শশীও আত্মহত্যা করেছিলো। নিশার লাশটা ওর ঘরেই পাওয়া যায় আর টেবিলে রাখা ছিলো একটা suicide নোট। তবে শশী ক্যানো আত্মহত্যা করেছিলো এটা কেমন যেন ধোয়াশার মধ্যেই রয়ে গেল। suicide নোটটা আমি নিয়ে এসেছিলাম এখনও আমি খুব যত্নে করে রেখেছি। suicide নোটটাতে ফুটে উঠেছিল একটা ব্যর্থ প্রেমের করুন কাহিনী। যে নিশাকে আমি এ্যাতোটা ভালোবেসেছিলাম সে হয়তো আমাকে ভালোবাসতে পারে নি কিন্তু বন্ধুভেবে ব্যপারটা একবার জানাতে পারতো। ভালোবাসার মানুষদের উপর রাগ করে থাকা যায় না। এজন্য হয়তো, নিশাকে আমি আজও ভালোবেসে যাই। হাঁটতে হাঁটতে গ্রামের কবরস্থানটার কাছে চলে এলাম। এখানেই আমার নিশা চিরনিদ্রায় শায়িত। বরাবরে মতো  ওর জন্য একটা গোলাপ এনেছিলাম। গোলাপ নিশার পছন্দের ফুল ছিল। আমি গোলাপটা ওর কবরের পাশে রেখে গন্তব্যের দিকে হাঁটা ধরলাম। নিশাদের গ্রামটা শহরের পাশেই। ওদের গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটা আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা। রাস্তাটাতে কোন বাক নেই। রাস্তার দুপাশে সারি সারি বয়সী গাছ। কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড শীত পরেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবেশটা কুয়াশার চাদরে জড়িয়ে গেলো। এ্যাতো গাঢ় কুয়াশা আমি জীবনে কখনো দেখি নি।আকাশের এক কোণে একটা মলিন চাঁদ জেগে আছে। চশমাটা কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসছে। চশমাটা খুলে গায়ের চাদর দিয়ে একটু মুছে নিলাম। শীতের দিন বলে একজন মানুষেরও দেখা নেই। চারদিকে শুধুই নিস্তব্ধ নীরবতা। এই নীরবতা ভেঙে পীচঢালা রাস্তটার পীচের সাথে নিজের জুতোর খট খট শব্দটা শুধু কানে আসছে। সবমিলিয়ে একটা গা ছমছমে ব্যাপার। হঠাৎ নিশার কথা তীব্রভাবে মনে পরছে। ওর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার দিনটার কথা। কাটানো মুহুর্তগুলোর কথা।

এ্যা স্টোরি অফ টোয়াইস মার্ডারWhere stories live. Discover now