★অন্তিম পর্ব★

130 20 10
                                    

#প্রিয়_তমা
#অন্তিম_পর্ব
#নউসিয়াত_জাহান_তিষা
.
.
.
উনি প্রতিদিন আমাদের বাসায় থাকতে শুরু করলেন। উনার বাবা অর্থাৎ ইমাদ সাহেব কিছুতেই উনাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারলেন না।
বাবা-মা মনে হয় এতে খুশি হলেন। বাবা উনাকে সাথে করে প্রতিদিন বাজারে যেতে শুরু করলেন, আসার সময় ব্যাগ ভর্তি বাজার উনার হাতেই থাকে।
শুনেছি উনি চা খাওয়াও শিখেছেন, মোড়ের দোকানে বাবার সাথে বসে নাকি ফুরুত ফুরুত শব্দ করে চা খান আর রাজনৈতিক গল্প মন দিয়ে শুনেন।
আবার মায়ের সাথে ছাদে ফুলের টবে মরিচ গাছ লাগাতেও আজকাল তাঁকে দেখা যাচ্ছে। তিনি ছাদে একটা চেরি গাছও লাগিয়েছেন। 'গোলাপি নাকি সাদা' কোন রঙের চেরিফুল ধরে সেটা দেখার জন্য এখন শুধু বসন্তকালের অপেক্ষা। হয়তো ছাদটা চেরি ফুলের সুভাসে ভরে যাবে অথবা গাছটা মরে শুঁকিয়ে যাবে।
আমার এখন আর উনাকে পড়াতে হয় না। কারণ তিনি নিজেই তিনবেলা রুটিন করে পড়তে বসেন।
কয়েকদিনেই উনার সব বাচ্চামো স্বভাব চলে গেছে!
যখন তখন চুমু নেবার জন্য উনাকে এখন আর দৌড়ে আমার কাছে আসতে দেখা যায় না। রাতে শুধু গম্ভীর হয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়েন আর বলেন, "ঘুমানোর আগে এতো ফোন টিপলে ঘুম আসবে না, তার চেয়ে চুপচাপ ঘুমাও।"
কী জ্বালা! এখন শান্তিতে একটু মোবাইলটাও দেখতে পারি না!
.
.
স্কুলে ক্লাস টেস্টে ফার্স্ট হলেও এখন তিনি কিটক্যাট চকলেট নিচ্ছেন না। তিনি আমার কাছে আসলে কী চাচ্ছেন আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।
দুদিনেই যেন উনার বয়স বেড়ে গেলো, এমন ভাব যেনো আমার চেয়েও বড় হয়ে গেছেন।
.
ইমাদ সাহেব প্রায়ই এসে আমাদের ডাইনিং রুমে বসে থাকে। আমি ছাড়া তাকে বাড়ির আর তিনজন লোক পাত্তাই দেয় না। তিনজনের ভাষ্যমতে, “এখানে সে তার মস্ত বড় অফিসের প্রেসিডেন্ট না যে তাকে হুজুর হুজুর করতে হবে, এই বাড়িতে সে নিতান্তই বাইরের মানুষ”।
তাই আমাকেই তার আতীতায়িত্ব করতে হয়।
আমি সেমাই-নুডলস রান্না করে তার সামনে দেই। কিন্তু লোকটা সেগুলো ছুঁয়েও দেখে না। মন খারাপ করে শুধু বলে, "আসওয়াদ কোনো দুষ্টুমি করছে না তো?"
আমি বলি, "না, গুড বয় হয়েই থাকেন।"
তিনি আরো বেশি মন খারাপ করা কন্ঠে বলেন,
"আসলে আজকাল আসওয়াদকে খুব মনে পড়ে। একটু কোলে নিতে ইচ্ছে করে। বলেছিলাম ওকে, কিন্তু কোলে উঠতে সে রাজি হচ্ছে না, সে নাকি বড় হয়ে গেছে তাই বাচ্চাদের মতো কোলে উঠবে না।"

প্রিয় তমাOpowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz