নতুন চাকরি পেয়েছি বেশিদিন হয় নি। মাত্র কয়েকমাস। কিন্তু এর মাঝেই আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। জীবনটায় এক রকম এক ঘেয়েমি চলে এসেছে। এরই মাঝে একদিনের কথা...
সেদিন অফিসে স্যারের কাছে একটু ধমক শুনতে হয়েছে। বাসায় আসার সময় আবার উনি আমাকে কতগুলো প্রজেক্ট এর progress নিয়ে PowerPoint Presentation বানানোর কাজ দিলেন আর বললেন যেন বাসায় বসে এই কাজটা শেষ করে কালকে সকালে উনাকে দেখাতে। এতকিছু মাথায় নিয়ে বাসায় উদ্দেশ্যে অফিস থেকে বের হলাম।
বাস স্ট্যান্ড থেকে আমার বাসা একটু ভিতরের দিকে। বাস থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম কী পরিমাণ দুর্ভাগা আমি! কোথায় বাসায় একটু রেস্ট নিয়ে রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচ দেখে ঘুমিয়ে পড়বো, তা না, আমার এখন বসে বসে অফিসের কাজ করা লাগবে। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার পাশে এক ভেলপুরি মামাকে দেখতে পেলাম। এই মামাকে আগে কখনো এলাকায় দেখি নি। কিন্তু ভেলপুরির লোভ আটকানো অনেক কষ্টসাধ্য। তাই মামাকে বললাম ভেলপুরি দিতে।
দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভেলপুরি খাচ্ছিলাম এমন সময় মা ফোন দিল। ফোন ধরার পরেই মা ওপাশ থেকে বলল,"কিরে শাহীন, কোথায় তুই?"
"এইত মা, আমি রাস্তায়। বাসায় আসছি।"
"এত দেরী কেন? তাড়াতাড়ি আয়।"
"দেরী কোথায় হলো? প্রতিদিন তো এই সময়েই আসি।"
"তাড়াতাড়ি আয়।"
এই বলে ফোন কেটে দিল মা। আমি এদিকে বুঝে পেলাম না মা হঠাৎ আমাকে এভাবে তাড়া দিল কেন! দ্রুত ভেলপুরি একরকম গিলে বাসার উদ্দেশ্যে দৌড় দিলাম।
কলিংবেল বাজিয়ে দাড়িয়ে আছি আর ভাবছি কি কারণে মা আমাকে ফোন দিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বলল। কাঠের দরজা আস্তে করে শব্দ করে খোলা হলো। দরজা খুলতেই আমার চোখে পড়লো এক মুচকি হাসি। হাসিটা এতটাই মন কাড়া ছিল যে আমার চোখ সেখান থেকে সরতেই চাচ্ছিল না।
"এভাবে বাহিরে দাড়িয়ে আছেন কেন? ভিতরে আসুন।"
কথাটা শুনেই বাস্তবতায় ফিরে এলাম। মেয়েটিকে চিনতে পারলাম না। ভুলে অন্য কারো বাসায় এসে পড়েছি ভেবে সরি বলে চলে যেতে নিচ্ছিলাম তখন সে বলল, "ভুল করেন নি। এটা আপনারই বাসা।"
YOU ARE READING
A Series of "Frost"
Short StoryShort stories are the mirror of life. They mirror life. These are the short stories of many different genres.