পূর্ব বাঙলার আওয়াম মুসলমানগণ, যারা বাঙলায় হাসে, বাঙলায় কাঁদে। (Credit: Kelly L)
হযরত নূহের আমলের মহাপ্লাবনের পর তাঁর অন্যতম ছেলে হাম দুনিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। হামের অন্যতম ছেলে হিন্দ যে অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন তার নাম হয় হিন্দুস্তান। হিন্দের দোসরা ছেলে 'বঙ' উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। বঙ এবং তাঁর বংশধরদের আবাসস্থলই 'বঙ্গ' নামে পরিচিত। বঙের সন্তান-সন্ততিরা এ অঞ্চলে কতকাল বসবাস করেন তা জানা যায় না। প্রাচীনকালে নানা বিবর্তন-পরিবর্তনের ফলে বঙ জনগোষ্ঠীর পরে ক্রমে নেগ্রিটো (Negrito), অস্ট্রোলয়েড (Australoid), অস্ট্রো-এশিয়াটিক (Austro-Asiatic), মঙ্গোলয়েড (Mongoloid), বা ভোট চীনীয় ও দ্রাবিড় গোষ্ঠী আসেন। তাদের অনেক পরে এ অঞ্চলে আর্যদের আগমন ঘটে। বঙ জাতির পর বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণেই বর্তমান বঙ্গ জাতির আদিমানব গোষ্ঠীর অভ্যুদয়।
বাংলাদেশে ষষ্ঠ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত গুপ্ত রাজত্বকাল ছিল। এ সময় হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির বিশেষ প্রচার-প্রসার ঘটে। গুপ্ত আমলে বাঙলা ভাষার উদ্ভব হয়নি। গুপ্ত আমলের অবসানে বৌদ্ধপাল রাজাদের রাজত্বকাল শুরু হয়। পাল আমলেই বাঙলা ও ভাষা সাহিত্যের উদ্ভব ঘটে। এ আমলে রচিত চর্যাপদ ছাড়া বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যের আর কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না। পাল রাজত্বের অবসানে ব্রাহ্মণ সেন রাজাদের রাজত্ব শুরু হয়। তারা ছিল 'বহিরাগত' এবং বৌদ্ধদের প্রতি অত্যন্ত বিদ্বেষপরায়ণ। তখন গৌড়ের লোকমুখে বঙ্গভাষার রেওয়াজ ছিল। বৌদ্ধরা বঙ্গভাষায় ধর্মপ্রচার করত। এতে ব্রাহ্মণরা পাল আমলের সবকিছু নির্বিচারে বরবাদ করে। এমনকি চর্যাপদের পাণ্ডুলিপিটা যদি রসিক ধর্মপরায়ণ বৌদ্ধ নেপালে পালানোর সময় সঙ্গে না নিলে বাঙলা ভাষার আদি নিদর্শন হিসাবে কিছুই বাকি থাকত না।
ESTÁS LEYENDO
খেয়াল খাতা
De Todoছন্নছাড়া কিছু খসড়া কিসিমের সংকলন...প্রবন্ধ, গল্প-কবিতা ইত্যাদি। তবে প্রবন্ধ-ই অগ্রগণ্য।