রুমি বেশ অনেক্ষণ ধরে ছেলেটিকে লক্ষ্য করছে। তার আর্ট কলেজের এক্সিবিশন সেন্টারে এখন তেমন কেউ নেই। বলতে গেলে অনেকেই চলে গেছে। কয়েকজন যদিও বা এখনো উপস্থিত রয়েছে। বেশ কয়েকটি ছবি বিক্রি হয়নি। সেই বেচে যাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে কয়েকটি তার আঁকা। রুমি এ নিয়ে কিছুটা হতাশ বললে ভুল হবে না। কত শখ করে এই আর্ট কলেজে ভর্তি হয়েছিল। এক্সিবিশনের কথা শুনতেই সে অস্থির হয়ে পড়ে কি ধরনের ছবি আঁকবে তা নিয়ে। সে বেশ যত্ন সহকারেই কয়েকটি ছবি এঁকেছিল। তবে সেগুলোর কাছে তেমন কেউ গিয়ে উপস্থিত হয়নি। এই নিয়ে সে কিছুটা মনক্ষুণ্ণ। তবে যায় হোক সে চেষ্টা চালিয়ে যাবে। যত যায় হোক না কেন সে এতো সহজে আশা হারাবে না।
---
রুমি লক্ষ্য করল ছেলেটি তার আঁকা একটা ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। রুমি ছেলেটিকে স্পষ্ট দেখতে পেল না। ছেলেটি পিছন ফিরে আছে। যতটুকু বুঝা যাচ্ছে যে ছেলেটি চশমা পড়ে আছে। চুলগুলো বেশ ছোটো করে কাটানো পিছনের দিকে। সামনে কেমন তা সে এই মুহূর্তে বলতে পারবে না। তবে যায় হোক ছেলেটির পোষাক পরিধানের ধরন দেখে রুমি না হেঁসে পারলো না। গায়ে হয়তো একটা লাল কালো চেক শার্ট। আর নিচে পরনে হলদে টিয়ে রঙের ট্রাউজার।
আর্ট কলেজের পড়ার দরুন সে যতটুকু রং সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে হলদে টিয়ে রঙের সাথে লাল রঙের মিলন ঠিক যায় না বলতে গেলে। শুধু কুৎসিত নয়, বরং তা শৈল্পিক ভাবনাতেও অবগতি ঘটায়। রং সম্পর্কে রুমি বেশ সচেতন। বিছানা বালিশের কভার থেকে শুরু করে তার এই মুহূর্তে পরনে থাকা সালোয়ার কামিজের রং নিয়ে তার বাছবিচার উন্নত মানের। রুমি এই মুহূর্তে নীল রঙের সালোয়ারের সাথে সাদা লেগিংস পরে আছে। লেগিংস সাধারণত একটু টাইট ফিটিং হয় তবে রুমি টাইট কোনো কিছু পরতে পারে না। তাই সে তার জামাকাপড় দর্জির কাছে গিয়ে একদম মাপে মাপে বানিয়ে নেয়।
---
রুমির আঁকা ছবি কেউ আজকে কিনুক আর না কিনুক, অনেক ছেলের নজরই আজ রুমির দিকে পরেছে। এমনিতে এক্সিবিশনে যে সবাই শিল্পীর চিত্রকর্মের জন্য আসে এমনটা নয়। অনেকে আসে সময় কাটানোর জন্য, কেউ কেউ তো আবার মেয়ে পটাতে পর্যন্ত আসে। ঠিক তেমনি আজকে অনেকে এসেছিল মেয়ে দেখতে। তাদেরই কয়েকজনের নজরে পরেছে রুমি। রুমিকে দেখেই কাছে এসে কথা বলতে চেয়েছিল। এই যেমন চিত্রকলার প্রশংসা, শিল্পীর মনোভাব নিয়ে কার কি ধারণা, ছবিগুলোর গভীর অর্থবোধক বিশ্লেষণ এইসব আরকি। কথাবার্তা শুনলেই বুঝা যায় জীবনে কোনদিন আর্ট এক্সিবিশনে এসেছে কিনা সন্দেহ, শুধু মেয়ে পটানোর ধান্দায় এলোপাথাড়ি ঢিল ছুড়ছে।
YOU ARE READING
দি আর্টিস্ট
Mystery / Thriller(গল্পের চরিত্র, ঘটনা, স্থান, কাল, সময় প্রত্যেকটি বিষয় কাল্পনিক। গল্পের সাথে বাস্তবতাকে মেলানোর চেষ্টা করবেন না।) রুমি বেশ অনেক্ষণ ধরে ছেলেটিকে লক্ষ্য করছে। তার আর্ট কলেজের এক্সিবিশন সেন্টারে এখন তেমন কেউ নেই। বলতে গেলে অনেকেই চলে গেছে। কয়েকজন যদিও...