নিতু বারান্দায় একটা ডায়েরি হাতে নিয়ে বসে আছে। মাঝে মাঝে কিছু চিন্তা করছে, আর কলমের খসখস শব্দ করে কবিতা লেখছে। নীল রঙের ডায়েরিটা তার ভীষণ পছন্দের। আর হবেই বা না কেন ? ডায়েরিটা তাকে উপহার দিয়েছিল আবির নিজে। নিতুর জন্মদিনের দিন। সেদিনটা এখনো নিতুর বেশ ভালো করেই মনে আছে। তাকে ভালোবাসার কথাটা জানিয়েছিল হরেক রকমের ফুলে ঘেরা একটা পার্কের মধ্যে হাঁটু গেড়ে বসে। আবিরের হাতে ছিল হলুদ গোলাপ। সেই হলুদ গোলাপের কয়েকটি পাপড়ি এখনো রয়েছে ডায়েরির ভাঁজে। যদিওবা শুকিয়ে গেছে। অনেকটাই আবিরের ভালোবাসার মতো। পার্থক্য এটুকুই যে, গোলাপের পাপড়ি শুকিয়ে মরে যায় প্রকৃতির নিয়মে, আর মানুষের ভালোবাসা কমে যায় অনুভূতি ফুরিয়ে গেলে। নিতুর মনটা কেমন যেন ছন্দ ছাড়া হয়ে গেছে। পুরো ডায়েরি জুড়ে রয়েছে কবিতা। সব কটি আবিরকে নিয়ে লেখা। কিন্তু আজকের কবিতাটি হাজার চেষ্টা করেও লিখে উঠতে পারছে না। তার গ্রামের বাড়ির বারান্দার সামনে বিস্তৃত জায়গা জুড়ে শুধু লম্বা লম্বা ঘাস। বাড়ির একপাশে যদিওবা রয়েছে কয়েকটি কাঁঠাল গাছ।
---
সেই গাছেই থাকে একটা কাঠবিড়ালী। কাঠবিড়ালী সাধারণত মানুষের মাঝে থাকলেও মানুষের আশেপাশে ঘেঁষতে ভয় পায়। কিন্তু নিতুদের কাঁঠাল গাছের কাঠবিড়ালীটার মধ্যে যেন সেই ভয় নেই। দিব্বি ঘাসের উপর দিয়ে খেলে বেরাচ্ছে। মাটি ভেজা। বৃষ্টি হয়েছিল সকালের দিকে। বৃষ্টির দিনে মাটির গন্ধ শুঁকতে তার বেশ ভালোই লাগে। অদ্ভুত এক নেশা থাকে তাতে। তার আর্ট কলেজে নাকি গতকাল একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। তারই রুমমেট অধরা নাকি আত্মহত্যা করেছে। নিতুর ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে অধরার মতো মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। তবে সে এটা অনেক আগেই আঁচ করেছিল যে এমন একটা ব্যাপার হয়তো যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে। সেদিনতো কাটার দিয়ে হাত কাটতে গিয়েছিল অধরা। তামান্না আপু না থাকলে হয়তো সেদিনই দুর্ঘটনাটা ঘটে যেত। অবশ্য অধরার জায়গায় নিতু থাকলে কি করত তা সে নিজেও জানে না। তার আত্মহত্যা করার উপায় নেই। তার মধ্যে বড় হচ্ছে আরেকটি প্রাণ। নিতু দৃঢ় সংকল্প বদ্ধ যে সে তার সন্তানকে পৃথিবীতে আনবেই।
YOU ARE READING
দি আর্টিস্ট
Mystery / Thriller(গল্পের চরিত্র, ঘটনা, স্থান, কাল, সময় প্রত্যেকটি বিষয় কাল্পনিক। গল্পের সাথে বাস্তবতাকে মেলানোর চেষ্টা করবেন না।) রুমি বেশ অনেক্ষণ ধরে ছেলেটিকে লক্ষ্য করছে। তার আর্ট কলেজের এক্সিবিশন সেন্টারে এখন তেমন কেউ নেই। বলতে গেলে অনেকেই চলে গেছে। কয়েকজন যদিও...