আমি একটা নষ্ট ছেলে, নষ্ট ছিলাম আর নষ্ট আছি। আমি এই পৃথিবীর সবাইকে ধোঁকা দিয়ে আসছি, কারন আমি মুখোশতলে আশ্রিত। আশপাশের সবাই ভাবে, আমি খুবই ভালো ছেলে, আমার মতন ছেলে হয় না। কিন্তু তারা কি জানে, আমার ভিতরের পশুটাকে? না তারা জানতে পারে না, তারা আমার অভিনয়টাকে ধরতে পারে না। আমার অন্তর্যামী পশুটা অপরাধ জগতে উল্লেখিত এমন কোন এক দুষ্কর্ম করতে ছেড়েছে বলে মনে হয় না। কত খুন-ডাকাতি, রাহাজানি, মার-দাংগা, চুরি-লুন্টন আরও যত্তসব অসামাজিক কাজকর্ম আছে।
আসলে আমার সব দুষ্কর্মের কথা কেউ জানতেই পারে না। এমনকি, আমার দ্বারা অত্যাচারিত, নিপিড়িতরাও ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারে না ওরা অত্যাচারিত হয়েছে। আর এটাই হলো, আমার ভদ্র সমাজে ভদ্র-পরিচিতির চাবিকাঠি। একেই বলে ভদ্রতার মুখোশ, আর এই মুখোশটাই হলো সভ্যতা।
আমরা ভীতুরা সবাই এই মুখোশের অন্তরালে নিজের আসল পরিচিতিটা আচ্ছাদিত করে রেখেছি। হ্যাঁ, আমরা ভীতু। আমাদের এই ভদ্রসমাজের বেশিরভাগটা হলো আসলে একটা ভীতুদলের আশ্রয়স্থল। আর তাইতো মুখোশের অন্তরালে চলে আমাদের জীবন-যাপন। আর এই ভীতুদলের সংখ্যা যত বাড়বে, ভদ্রতার মুখোশের অন্তরালে যত আশ্রিত হবে, ততই সমাজের মঙ্গল।
তাইতো আমি সমাজহিতৈষী, মঙ্গলকামী ভদ্রসমাজকে বলি, অনেক হয়েছে সাহসী হওয়ার ডাক, এবার ভীতু হওয়ার জন্য একটা ডাক দিন। এই সমাজটা আজকাল যেভাবে সাহসী আর বেপরোয়া হয়ে উঠছে, তাতে সভ্যতা আর ভদ্রতা অন্তিম শয্যায় শায়িত।
তাইতো আমরা চাই এমন একটা ভীতু সমাজ, যার দ্বারা সমাজের মঙ্গল না হলেও চলবে কিন্তু অমঙ্গল কক্ষনো হবে না। উদভ্রান্ত, বেপরোয়া, অভিশপ্ত সাহসী সমাজের দরকার নেই আমাদের। যারা নিজের জন্য বাঁচে, নিজের জন্য মারে, নিজের জন্য সবকিছু ছিন্নভিন্ন করে, এমন সাহসী সমাজ অনভিপ্রেত। আর তাইতো বলি নষ্ট সমাজে কোন অসুবিধে নেই আমাদের, কিন্তু তথাকথিত সাহসী সমাজ চাই না। এমন একটা ভীতু সমাজ কাম্য, যাদের নষ্টতা থাকবে মুখোশের অন্তরালে, নষ্টতার শিকার কেউ হবে না।
YOU ARE READING
নগ্ন জীবন
Poetryআমার কথা ------------ আমাদের চারপাশের মুখোশাবৃত সমাজটার নগ্ন চিত্র আর চরিত্র উত্খলনে আজ আমি ইকবাল চৌধুরী কিবোর্ড হাতে। আমার লেখা কবিতার ধারাবাহিক প্রকাশনা করতে ইচ্ছুক এই বইটিতে। আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ, প্লিজ আমার লেখা পড়ে আপনার ভালো-মন্দ মতামত...