এক্সপেরিমেন্ট

374 21 8
                                    

আজকে অনুর মনটা ভীষন খারাপ। মা তাকে আজ শাস্তি হিসেবে আজ বাইরে খেলতে যেতে বারণ করেছে। মার এটা একদমই উচিত হয়নি। সে কি এমন দোষ করেছে! সে তো শুধু মায়ের শাড়িটা ঠিক মাঝ বরাবর কেটে অর্ধেক করেছে।এটা কি এমন দোষ যে মা তাকে বাইরে খেলতে যেতে দেবেনা। সে কি এমনি এমনি কেটেছে।তার শাড়ি পরতে ইচ্ছে করছিল তাই মাকে বলেছিল শাড়ি পড়িয়ে দিতে।কিন্তু মা শাড়ি বের করে দিয়ে না পড়িয়ে অন্য কাজে চলে গেল।আর অত বড় শাড়ি কি সে পড়তে পারে?পুরো শাড়ি পেচিয়ে  যাচ্ছিল,তাই সে ভাবল কেটে ছোটো করলে ঠিক করে পড়া যাবে।যেই ভাবা, সেই কাজ। শাড়িটা ছোটো করে সে মোটামুটি ভালোভাবে পরতে পেরেছে।

তারপর মা আজকে দুপুরে যখন বলল যে দুধটা চুলোয়,আমি এক্ষুনি আসছি এ-র মাঝে যদি বলক আসে তাহলে শুধু জালটা কমিয়ে দিবি আর কিছু করবি না, তখন তো সে জাল কমিয়ে দিতোই কিন্তু ঝামেলা বাধলো বলক আসার পর।বলক আসলে দুধের ফুলে উঠা দেখে সে  মুগ্ধ বিষ্ময়ে ভাবতে বসে গেল এ-র পেছনের বিজ্ঞানটা কি আর জাল কমানোর কথা একদমই ভুলে গেল।ফলাফলস্বরূপ পুরো দুধটুকু চুলোয় পড়ে একদম ছড়াছড়ি অবস্থা।কিন্তু সে তো আর ইচ্ছে করে করেনি।

আজকে বাইরে যেতে না পারলে কালকে বাবলুটা যা খেপানো শুরু করবে।সে বাবলুকে কাল বলেছিল সুইকে পানিতে ভাসানো যায় কিন্তু বাবলু তা কোনোভাবেই বিশ্বাস করেনি,তাই সে বাবলুর সাথে বাজি ধরেছিল যে সে যদি সুইকে ভাসাতে পারে  তাহলে বাবলু তাকে দশটা মারবেল দেবে আর না পারলে সে দেবে।সুইকে একটু তেলে ডুবিয়ে নিলেই তা আর পানিতে ডুবে না।এটা ঘটে মূলত পানির পৃষ্ঠটানের জন্য। আজ বিকেলে এটি দেখানোর কথা।তাই সে সুই নিয়ে প্রস্তুত কিন্তু আজ তো মা বাইরে যেতে দেবে না বলছে।কি একটা ঝামেলায় পরা গেল!কাল বাবলুটা আর দেখতেও চাইবে না, খেপাবে আর বাজির দশটা মারবেলও দিতে হবে। মাও বুঝতে চাইছে না।কিন্তু মাকে না বলে গেলে মা তাকে যে বইটা কিনে দেওয়ার কথা সেটা কিনে দেবে না।বইটার জন্য এ-ই কয়েকদিন একটু ভালোভাবে চলতে হবে।

আজ অনু একটা মজার এক্সপেরিমেন্ট এ-র কথা মা যে নতুন বইটা কিনে দিয়েছে সেটায় পরেছে।এখন সে এটা হাতে কলমে করবে কিন্তু তার জন্য একটা সিগারেট দরকার। কোনো একটা লোহার রডে কাপড় পেচিয়ে যদি তাতে সিগারেটের আগুনের ছেকা দেওয়া হয় তাহলেও সে কাপড়টা পুড়বে না। যেরকম ছিল সেরকম থাকবে।এক্ষেত্রে তাপটা লোহার রডে শোষণ করে নেয়।লোহার রড তার কাছে আছে,এখন দরকার শুধু সিগারেট। কিন্তু ঝামেলা হচ্ছে তাদের বাসায় কেউ সিগারেট খায়না।

তাই সিগারেট কিনে আনতে হবে কিন্তু মাকে বললে মা আনতে দিবে না।তাই সে বাসার সামনে করিম চাচার দোকানে গিয়েছে সিগারেট কিনতে।অনু সিগারেট কিনতে চাচ্ছে দেখে করিম চাচা তো অবাক,এতো ছোট মেয়ে সিগারেট কিনে কি করবে।করিম চাচা অনুকে জিজ্ঞেস করল যে সে সিগারেট দিয়ে কি করবে।অনু বলল, একটা এক্সপেরিমেন্ট করব চাচা।করিম চাচা আবার কানে একটু কম শোনেন। তিনি শুনলেন,একটা এরোপ্লেন বানাবো,চাচা। করিম চাচার তো আক্কেল গুডুম অবস্থা। কি বলে এ-ই মেয়ে! কে কবে শুনেছে যে কেউ সিগারেট দিয়ে এরোপ্লেন বানায়।

তিনি অনুকে আরেকটা প্রশ্ন করতে গিয়ে দেখেন অনু ততক্ষণে চলে গেছে। বিকেলে অনুর মা করিম চাচার দোকানে ডিম কিনতে আসলে করিমচাচা অনুর সিগারেট কেনার কথা,সেই সাথে এরোপ্লেনের কথাও বলল।মা শুনে তো আকাশ থেকে পরলেন। তিনি জানেন তার মেয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ করে কিন্তু তাই বলে সিগারেট দিয়ে এরোপ্লেন!বাসায় ফিরে তিনি আরেকটা ধাক্কা খেলেন।

অনুর কান্ডWhere stories live. Discover now