কিছুদিন হলো বাবলুর মাথায় একটা নতুন ঝোঁক উঠেছে ।তার মতে ডাকাত জিনিসটা আমাদের দেশ থেকে উঠে যাচ্ছে । আগের দিনে গ্রাম বাংলায় ডাকাতের ভয়ে মানুষ তটস্থ হয়ে থাকতো , দাদাদাদিরা তাদের নাতিদের ডাকাতের গল্প শুনাত আর এখন বাচ্চাকাচ্চারা জানেই না ডাকাত জিনিসটা কি !
তো বাবলু মহা উৎসাহের সাথে সবাইকে বলল একটা 'ডাকাতের দল' খুললে কেমন হয়? বাবলুর এই মহৎ উদ্যোগে সবাই একমত । শাফি অবশ্য একবার আপত্তি করার চেষ্টা করেছিল । কিন্তু সবার উৎসাহের মুখে তার আপত্তি ধোপে টিকে নি।
ছোটখাটো একটা পরিকল্পনার পরই সবাই লেগে গেলো ডাকাত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যোগারযন্ত্রে । এই ক্ষেত্রে বাবলুর উৎসাহই সবচেয়ে বেশি। ডাকাতের গ্যাং খোলার জন্য কি কি লাগে বাবলু খুব উৎসাহের সাথে সেগুলোর যোগাড়যন্ত্রে লেগে গেল । কিন্তু ঝামেলা বাধল চাপাতি, ভোজালি আর অন্যান্য অস্ত্রের সন্ধানে ।এই সব অস্ত্রশস্রের কথা সে উইকিপিডিয়া থেকে জেনেছে ।মাকে বাবলু একবার জিজ্ঞেস করার চেষ্টা করেছিল এই সব অস্ত্র সস্ত্র কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে কিন্তু মার ঝাড়ি খাওয়ার পর মাকে আর ঘাটায়নি সে।
বাবলুরা সবাই মিলে পাড়ার সবগুলো মনিহারি দোকানে ডাকাতির সরঞ্জাম খুজেছে। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি। একটু আধটু দুষ্টামি পাগলামি করলেও পাড়ার সবাই তাদের এই দুষ্টামি উপভোগ করে,তাদেরকে স্নেহ করে। তাই তাদের এই নতুন খেলায় বাবা মা ছাড়া সবাই তাদেরকে একটু আধটু সাহায্য করার চেষ্টাও করেছে কিন্তু তার পরও খুব একটা লাভ হয়নি। সবাই যখন ধরেই নিয়েছে যে তাদের এই প্রকল্প মোটামুটি ব্যর্থ তখন রহমান চাচা তাদের বুদ্ধি দিল কাঠের জিনিসপত্র বানায় সেসব দোকানে গেলে বানিয়ে দিতে পারে।
রহমান চাচার কথা তো বলাই হয়নি। রহমান চাচার বাচ্চাকাচ্চারা সব বড় বড় ।কেউ দেশে থাকে না। এখানে সুধু রহমান চাচা আর চাচি থাকে। রহমান চাচার বাড়িটা গাছপালায় ঘেরা। একটা 'গাছবাড়িও' আছে রহমান চাচার বাড়িতে । গাছবাড়িটা অনুদের গোপন ল্যাবরেটরি এবং গোপন বৈঠক খানা । রহমত চাচার বাসায় তাদের অবাধ যাতায়াত। যেদিন বাসায় ঢোকা এবং খাবারদাবার বন্ধ থাকে সেদিন চাচি তাদের জন্য বিশাল আয়োজন করে । আর প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে এক দুইবার চাচিকে এই আয়োজন করতে হয় ।আর এমনিতে তো প্রতিদিন যাওয়া আসা আছেই। চাচি তাদের খুব আদর করে। বাবলুর মতে সে যে বাড়ি থেকে পালিয়ে বাদামওয়ালা হয়নি সেটা কেবল চাচির জন্য। না না সুধু চাচির জন্য না ।চাচির হাতের রান্নাও তার একটা বড় কারন।
ভোজালি আর চাপাতির ব্যবস্থা না করতে পারলেও আকবর কাকা তাদেরকে একদম ফাস্ট ক্লাস রাইফেল আর বন্দুক বানিয়ে দিয়েছে । দেখে মনে হয় এ কে ফরটি সেভেন । বোঝার উপায়ই নেই যে এইটা নকল । বাসা থেকে সবজি কাটার ছুরিও নিয়ে আসা যাবে । কিন্তু যে জিনিসটা সবচেয়ে ঝামেলার তা হচ্ছে তারা ডাকাতিটা করবে কোথায় !
YOU ARE READING
অনুর কান্ড
General Fictionঅনু এমন একটা মেয়ে যে বিচিত্র এবং অদ্ভুত কান্ড করে বেরোয়।অবশ্য এ-র জন্য তাকে মায়ের কাছে বকুনিও কম খেতে হয় না। বন্ধুরা এটি আমার প্রথম গল্প।লিখেছি অনেকটা বান্ধুবিদের চাপে।এর আগেও লিখেছি কিন্তু একটাও শেষ করতে পারিনি।সে হিসেবে এটিই প্রথম। প্রথম গল্প হিসে...