বাবলু নেতাদের মত ভাষন দেওয়ার স্টাইলে বলল, মনে আছে পল্টু ভাই আমাদের সাথে কি করল! কিভাবে সংস্কৃত ক্লাবের কাছে গেলে দূর দূর করে তারিয়ে দেয় । কি এমন দোষ করেছি আমরা বল তো ।পল্টু ভাই যখন প্রথম সাংস্কৃতিক ক্লাব গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন কারা তার সাথে ঘুরে ঘুরে প্রচারনা করেছিল? এই আমরা । পল্টু ভাইয়ের ক্লাব যখন ফাঁকা কোন সদস্য ছিল না তখন আমরা এই আমরা আমদের অতি মূল্যবান খেলার সময়টা তাকে দিয়েছি ।সবাই মাথা নাড়ল । তার বিনিময়ে আমরা কি পেলাম ? হেনস্তা ! দুর্ব্যবহার!
পল্টু ভাই যখন উদ্যোগ নিল পাড়ার সংস্কৃতি চর্চাকে বাড়ানোর , পাড়ায় নাটক গান কবিতাসহ বিভিন্ন আয়োজনের তখনও আমরা কত খেটেখুটে তাকে সাহায্য করেছি ।
কি কথা ছিল ?আমাদেরকে নাটকে পাঠ দেবেন । এইবার শাফি হাত তুলল ,আমাদেরকে না সুধু তো..।
বাবলুর চোখ পাকানো দেখে থেমে গেল । তো কি বলছিলাম বন্ধুরা , সেই পল্টু ভাই যাকে কিনা আমরা আমাদের অতি মুল্যবান সময় খরচ করে সাহায্য করেছি আর সেই আমাদের পাছায় লাথি মেরেছে ।এবার সুজন বাবলুকে শব্দ চয়নে আরেকটু সাবধান হতে বলল ।
তো পল্টু ভাই কি করল চেয়ারম্যানের ছেলেকে প্রধান পাঠটা দিল । আর আমাকে কি বলল ? এতগুলা ডায়লগ আমি নাকি মনে রাখতে পারব না ।
তৃষা মাঝখান থেকে ফোঁড়ন কাটল , এক্ষেত্রে আমিও পল্টু ভাইয়ের সাথে একমত ।
বাবলু তৃষার কথা শুন্তে পায়নি এমন ভাব করে বলতে লাগল , আমকে দিল একটা ছোট পাঠ । তাও আবার মেয়ে সাজিয়ে কোন ডায়লগ ছাড়া ! ভাবাজায় ? তাও আমি মেনে নিয়েছিলাম কিন্তু ঐ বদমাইশ হরিতকে দিল একেবারে মন্ত্রীর পাঠ । এটা কি কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় । একথা পল্টু ভাইকে বলতেই বলল কিনা ' যা যা বেশি বকিস নে । যে পাঠ দিয়েছি ঐ নিয়েই খুশি থাক ।' তারপরও আমি কোন কথা বলি নাই । বলছি?
সবাই মাথা নাড়ল ।
তারপর অনুর কথাই ধর । পাড়ার বাচ্চাদের বিজ্ঞান মনষ্ক করতে মাত্র দুইটা এক্সপেরিমেন্ট করেছিল । বাচ্চারাও তো ভীষণ আনন্দও পেয়েছিল, যদিও তারা এটাকে ম্যাজিক হিসেবেই নিয়েছিলো । তো সে কি এমন দোষটা করেছিল ,খালি এর পেছনের সাইন্সটা বোঝাতে গিয়ে একটু বেশি সময় নিয়ে ফেলেছিল । তা এটা তো আমরা সবাই জানি যে অনু একবার সাইন্স নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে আর থামতেই চায় না,আর এজন্যই বিজ্ঞানের কোন কিছু নিয়েই তাকে কেউ ঘাটায় না । পাড়ার সবাই এটা জানে । তারাও কিছু মনে করে নি । কিন্তু পল্টু ভাই রেগেমেগে একশেষ।
তারপর ধর সুজনের কথাই ।সে যখন তার স্বরচিত কবিতা আবৃতি শুরু করে তখন যে সে আর এ জগতে থাকে না এটাও পাড়ার সবাই জানে তাই তাকে কেউ খুব একটা ঘাটাতে যায় না এমনকি ওর বাপ মা পর্যন্ত ওকে ঘাটায় না ।
তা কবিতা প্রেমি মানুষ যখন কবিতা শোনানোর একটা সুযোগ পেয়েছে তা ছাড়বে কেন ? তা বলিহারি এতে পল্টু ভাইয়ের এত রাগ করতে হবে !
তা আমদের সুজনের গুণই বা কম কি ? সেবার যখন হঠাটি পাড়ায় চোরের উৎপাত বেড়ে গেল তখন কে চোরকে ধরেছিল । এই সুজন ।যদিও তার অজান্তেই কিন্তু ধরেছিল ত ।
শোনা যায় চোর যখন চুরি করে সুজনের ঘরের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল তখনই সুজন বলে উঠল "খামোশ, শয়তান" । আসলে সুজন একটা কবিতা আবৃতি করছিলো, তাই শুনে চোর ভেবেছে সে বুঝি ধরা পরে গিয়েছে । তাই ভয় পেয়ে সে সেখানেই দাড়িয়ে পরল। ।একদম স্টাচু অব লিবার্টি। একটু পর সুজনের বাবা ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন যে ১ লোক বিশাল এক বস্তা কাধে নিয়ে সুজনের ঘরের সামনে নট নড়নচড়ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।সুজনর বাবাও ঐ লোককে দেখে থতমত খেয়ে গেছেন । এমন সময় সুজনের মা ঘর থেকে বের হয়ে চোরকে দেখে পারার লোকজনজনদের ডেকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন। সেই থেকে পারায় চোরের উৎপাত একদম বন্ধ। তাহলে পুরো ক্রেডিটটা কার! সুজনেরই তো ।
এরপর শাফির কথাই ধর। বেচারা একটু পরিবেশ সচেতন। সে একটা বক্তৃতা দিতে চেয়েছিলো পরিবেশের উপর, পল্টু ভাই বক্তৃতা দেওয়ার কথা শুনে কি তেলেবেগুনেই না জলে উঠেছিল দেখেছিলি!
সবাই সায় দিল ।
এবার বাবলু জ্বালাময়ী ভাষণের ভঙ্গিতে বলল , এর একটা বিহিত করতেই হবে।
সবাই সমস্বরে বলল ,হবে হবে হবে ।
কিন্তু কীভাবে বিহিতাটা করবে?
বাবলু প্রস্তাব দিল ,হরতাল ডেকে গাড়ি ভাঙচুর করার কিন্তু ঝামেলা হচ্ছে তাদের পাড়ায় রিক্সা ছাড়া কিছু আসে না ।সুতরাং এই পরিকল্পনা বাদ ।কি করা যায়, কি করা যায় ভাবতে ভাবতে অনুর মাথায় একটা আইডিয়া চলে এল । ফিচলে বুদ্ধিতে বাবলু ফাস্ট হলেও অনুও কিন্তু কিছু কম যায় না ।অনুর বুদ্ধিটা সবার মনে ধরল । যোগাড়যন্ত্র সব অনুই করবে এখন শুধু অপেক্ষার পালা ।
VOUS LISEZ
অনুর কান্ড
Fiction généraleঅনু এমন একটা মেয়ে যে বিচিত্র এবং অদ্ভুত কান্ড করে বেরোয়।অবশ্য এ-র জন্য তাকে মায়ের কাছে বকুনিও কম খেতে হয় না। বন্ধুরা এটি আমার প্রথম গল্প।লিখেছি অনেকটা বান্ধুবিদের চাপে।এর আগেও লিখেছি কিন্তু একটাও শেষ করতে পারিনি।সে হিসেবে এটিই প্রথম। প্রথম গল্প হিসে...