২৬শে চৈত্র, ১৪২৩

370 29 12
                                    

আমি যখন ছোট, তখন playschool বা pre-school এর কোনো concept ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই স্কুলের প্রথমদিন মাকে জড়িয়ে ধরে খুব কেঁদেছিলাম। আমার স্কুল অর্থাৎ La Martiniere School for Girls, কলকাতা। ২.৫ বছর বয়সে বাবা মায়ের সঙ্গে গাড়িতে করে প্রথম যেদিন পা দিয়েছিলাম স্কুলে, খুব একটা ভালো লাগেনি ব্যাপারটা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ভালোবেসে ফেলেছিলাম স্কুলকে। ধীরে ধীরে মাধ্যমিক পাশ করলাম তারপর উচ্চ-মাধ্যমিক।

এরপর সময় এলো একটা সঠিক বিষয় নির্বাচনের। সাড়ে ৩ বছর বয়স থেকে গান শিখতাম। ঠিক করলাম গান নিয়েই পড়াশোনা করবো। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক-স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হলাম B.Mus অর্থাৎ Bachelor of Music Dance and Drama কোর্সে, রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে। খুব তাড়াতাড়ি প্রচুর বন্ধু হয়ে গিয়েছিল ওখানে। ভর্তির কয়েকমাসের মধ্যে আমাদের department থেকে একটা অনুষ্ঠান করা হয়েছিল,যেখানে আমি একা গান গেয়েছিলাম। সেই গান শুনে আমাকে একটি বাংলা ধারাবাহিকে গান গাওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন একজন বিখ্যাত পরিচালক। স্টুডিওতে গিয়ে গান গাওয়া, সে এক অদ্ভুত অনুভূতি !

বিশ্বভারতী থেকেই M.Mus (Master of Music, dance and drama) করলাম। মনে আছে, University topper ছিলাম। কলকাতা ফিরে আসার পর, আমাকে বাড়িতে বেকার বসে থাকতে হয়নি। বহু সিরিয়াল, সিনেমাতেও playback করেছিলাম।

ইতিমধ্যেই বাড়ি থেকে, ঠাম্মা বললেন, "কীরে! বিয়ের কথা ভাবলি ?"

তখন আমার বয়স, ওই ২৫। বিয়ের কথা যে একেবারেই ভাবিনি সেটা বললে মিথ্যে বলা হবে। অনেক মেয়ের মতো আমারও বিয়ে নিয়ে একটা স্বপ্ন ছিল। তাছাড়া তখন সদ্য সদ্য আমার দুই দাদার বিয়ে হয়েছে। নিজের বিয়ের আকাঙ্ক্ষা তা যেন নতুন করে চাগার দিয়ে উঠলো। ঠাম্মা কে বলেছিলাম, "হ্যাঁ, ওই আরকি ।"

ঠাম্মা জিজ্ঞেস করলেন, "কাউকে ভালো লাগে ?"

আমার উত্তর ছিল "না"। ২৫ বছরের জীবনে যে কাউকে ভালো লাগেনি তা নয়, কিন্তু বিয়ে করার মতো করে কাউকে সত্যি পাইনি তখনও।

অতএব শুরু হলো পাত্র দেখা। ৭ মাসের মধ্যে একজন কে মোটামুটি পাওয়ায় গেল, মনে ওই সবার ভালো লাগলো। ভারতবর্ষে বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র/পাত্রী কে 'সবার' পছন্দ হওয়াতা প্রায় আবশ্যিক। আমারও ভালো লেগেছিল। বেশ রাজপুত্তুরের মতো দেখতে। বেশ লম্বা, সুদর্শন, এবং দাড়ি trim করা (সবথেকে বেশি এটিই ভালো লেগেছিল তার মধ্যে আমার😂)।

ছেলের নাম অগ্নিভ রায়চৌধুরী। পারিবারিক ব্যবসা, ওই chain of hotels। অবস্থাপন্ন, কিন্তু আমাদের মতো না। জেম্মা কে বলতে শুনেছিলাম, জেঠু কে বলছিলেন,

"দেখো! আমাদের মতো এতটা অবস্থাপন্ন না তো, আমাদের মেয়েটাকে মাথায় তুলে রাখবে ।"

-----------------------------------------------------------------

|| শিমন্তীনি || ✔️Where stories live. Discover now