#আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_১৫আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য বেছে নেয় আত্মহননের পথ। কম কষ্টে অথবা কম গ্লানি নিয়ে তারা দুনিয়ার জীবনের সমাপ্তি ঘটায় না। তবে কেনো আত্মহত্যাকে মহাপাপ বলা হয়? তার সাথে ঘটা সকল ঘটনার পরও কি আত্মহত্যা মহাপাপ? এই কষ্টের জীবনের চেয়ে কি আত্মহত্যা সহজ নয়? পর্থিব জগতে হাজারো স্বপ্ন ভঙ্গের পর একবুক কষ্ট নিয়ে নিরাসক্ত মানুষই আত্মহত্যা করে.. তবে কেনো আত্মহত্যা মহাপাপ? হাতে ব্লেড নিয়ে বসে চিন্তায় নিমগ্ন ছিল দ্যুতি। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তা একপাশে সরিয়ে ফেললো সে। আগ্রহী দৃষ্টিতে দরজার দিকে তাকাতেই ঘরে প্রবেশ করলো সারজিম। মুখভর্তি হাসি নিয়ে দ্যুতির দিকে একটি শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে সে বললো,
-এটা তোমার জন্য..
একপলক সেদিকে তাকিয়েই নজর সরিয়ে নিল দ্যুতি। ব্লেডটি দিয়ে সারজিমের গলায় একটা টান বসিয়ে দিলেই কি মৃত্যু হবে ওর?
-মনে আছে তুমি আমায় বলেছিলে লাল পাড়ের তুষারের মতো সাদা শাড়ি পড়ে তুমি আমার পাশে বসে পুরো ঢাকা ঘুরবে.. যাবে আজ?
বুকের ভেতরটা টিপটিপ করে উঠলো দ্যুতির। মনে নেই তার.. কিচ্ছুটি মনে নেই!
-আজ আমার জন্য পড়বে শাড়িটা?
-না..
-পড়বে না? রিকশায় আমার পাশে বসে পুরো ঢাকা ঘুরবে না?
-না..
স্থির গলায় দ্যুতি জবাব দিতেই গলার স্বর ভারী হয়ে এল সারজিমের।
-তুমি পড়বে শাড়িটা।
-আমি পড়বো না। গেট আউট অফ দিস রুম নাউ.. আই সেইড নাউ!
নড়লো না সারজিম। উত্তেজিত হয়ে বললো,
-আমি সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছি দ্যুতি। আজ থেকে তুমি শুধুই আমার.. শুধুই আমার। হ্যাঁ.. আমি মানছি আমি খারাপ। জঘন্য.. তোমার ভালোবাসা পাবার একদমই জোগ্য নই। তবে আজ থেকে তুমি শুধুই আমার দ্যুতি।
একমুহূর্তের জন্য থামলো সারজিম। দ্যুতির দু'হাত চেপে ধরে নরম সুরে বললো,
-তুমি শুধু আমায় এটুকু উত্তর দাও আমি নিজে কখনো তোমাকে শারিরীক ভাবে কষ্ট দিয়েছি? আমি লাস্ট কবে তোমার কাছে এসেছিলাম বলতে পারো? হ্যাঁ.. আমি তোমার হাত পা বাঁধতাম। হাসান ভাইয়ের সাথে বসে ড্রিংকস করতাম। তবে কখনোই আমি তোমাকে বেঁধে তোমার সঙ্গে থাকিনি। কজ, আই লাভ ইউ।
নিজে না করেও অন্যকে দিয়ে করিয়েছো.. সারারাত হাতপা বেঁধে রেখেছো, দিনভর বন্দী রেখেছো.. এসব কী? কষ্ট না? মুখে এলেও কথাগুলো বললো না দ্যুতি। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মেঝের দিকে।
-আর কষ্ট করতে হবে না তোমার.. শেষ। সব শেষ। আর কেও আসবেনা তোমার কাছে। আর তোমার বন্দী জীবন কাটাতে হবে না.. আর আমি তোমায় কষ্ট পেতে দিব না.. বিশ্বাস হয় না তোমার? আমি সভাপতি হয়ে গেছি দ্যুতি।
এরই মাঝে ফোনের রিংটোন বেজে উঠতেই দ্যুতির হাত ছেড়ে দিল সারজিম। হাসিমুখে ফোন রিসিভ করে বললো,
-ক্যাম্পাসের কী অবস্থা? আনন্দ মিছিল হচ্ছে?
-না.. ভাই। একটা মিস্টেক হয়ে গেছে। তুমি না.. টুকু ভাই সভাপতি হইছে। হাসান ভাই আমাদের সাথে বেঈমানী করছে ভাই.. বেঈমানী করছে।
মাথায় যেনো বাজ পড়লো সারজিমের। হতভম্ব হয়ে গেল সে। হাসান বেঈমানী করেছে? অসম্ভব.. হাসান তার সাথে এগ্রিমেন্ট করেছিল। দ্যুতিকে দেখিয়ে বলেছিল, এই সুন্দর মেয়েটিকে প্রতিরাতে বিছানায় এনে দিতে পারলেই তুই সভাপতি। বিশ্বাস হয় না? ঠিকাছে.. চল। কাগজে কলমে ডিল হয়ে যাক। তাহলে আজ সে তার কথা থেকে নড়তে পারেনা। ফোন কেটে দ্রুত পায়ে পাশের ঘরের দিকে ছুটলো সারজিম। এগ্রিমেন্ট পেপারটি কোথায়? তার কাছেই তো ছিল...
YOU ARE READING
আকাশ পাঠাবো তোমার মনের আকাশে
General Fictionইশতিয়াক দ্যুতির জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের গল্প নিয়ে তৈরি #আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে