বাবা রাজদীপ সরকার, তিনি শুধুমাত্র একজন সাধারণ আড়তদারই নন এই এই মূর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে তিনিই হচ্ছেন এক ব্যক্তি যার বিদেশে খাদ্যশস্য বিক্রি করার ট্রেড লাইসেন্স আছে তার উপর তিনি আবার রেশনের ডিলার। আর কিছু জানুক আর না জানুক কিন্তু লোকের টাকা পয়সা কি করে মেরে খেতে হয় সেই কায়দাটা ভালো করেই রপ্ত করেছেন। মা সুমনা সরকার একজন গৃহবধূ এবং স্বামীর থেকে পুরো বিপরীত স্বভাবের এক বোকা, স্নেহশীল ও ধর্মপরায়ণ নারী। বড়দা সুমন সরকার এক সিভিল কন্ট্রাক্টর পিচ মেরে খেতে বড়ই ওস্তাদ তার উপর ছোটদা তাপস সরকার একজন ইঞ্জিনিয়ার, বাকি আর কোনো কিছুই গর্ব করার মত নেই।
বড়দা আমার থেকে বারো বছরের আর ছোটদা নয় বছরের বড়ো। দুটো ছেলে থাকা সত্ত্বেও মায়ের মনের মধ্যে খুশি ছিল না কারণ মায়ের স্বপ্ন ছিল তার একটা মেয়ে হবে যাকে তিনি মন খুলে সব কথা বলবে, তাকে প্রতিদিন নিজের গয়না কাপড় দিয়ে সাজাবেন আরো যত স্বপ্ন থাকে এক মায়ের মধ্যে তার সব কিছুই ছিল এবং তা ছিল একটুখানি বেশি বেশি করেই। এককথায় মায়ের সখের বস্তু হচ্ছি আমি। কিন্তু আমি তো উল্টো বাঙাল সাজা গোছ তো দূরে থাক একটা টিপ পড়তেও নারাজ। পরার মধ্যে পছন্দ করি পাঞ্জাবি কূর্তি তার সাথে একটা জিন্স প্যান্ট, একটা সিম্পল হাতঘড়ি তার সাথে স্টেপ করে কাটা চুল , কানে বসানো ছোট্ট দুল ------ এটাই আমার সবচেয়ে পছন্দের পোশাক আশাক। মা প্রথম প্রথম দুঃখ করতেন বটে কিন্তু এখন মায়েরও সব কিছু সয়ে গেছে স্নেহের কাছে তিনি যে হার মেনে নিয়েছেন।আমি মায়ের খুব কাছের তবুও ভয় পায় মায়ের সামনে আমার সত্যটা প্রকাশ করতে। মায়ের মনের মতো কোন কিছুই তো করে উঠতে পারলাম না এর পরেও যে মায়ের ভয়ানক ইচ্ছে জামাইকে আদর করে বসে খাওয়াবে সেটার এখন কি হবে ??!!!
মায়ের কাছে গিয়ে কি তবে সবকিছু বলে দেব --- আরে না না মা হয়তো বকা দেবে বা আরও অন্য কিছু ধারণা হীন কাজ করে দেখাতে পারে, সমাজে মুখ দেখানো বলেও তো আবার এক প্রকার মহান ভয়ানক প্রথা আছে ওটাকেও ভূলে গেলে চলবে না। যা হয় আগে দেখা যাবে আর আমার তো অত ভেবে লাভ নেই কারণ শ্রেয়া তো আজ আর নেই ----- 😔😔