নতুন অনুভূতির এক সন্ধেবেলা

118 6 0
                                    


পূর্ণিমার রাত তাই চাঁদ উঠতে এখনও একটু দেরি আছে, আমি আর ঋতুর দিদা ছাদের উপর পাশাপাশি শুয়ে একটা একটা করে ফুটে উঠা তারা গুলোকে গুনছি। আমার উত্তর দিকের আকাশের মালিকত্ত এখন আমার আর দিদার দক্ষিণ দিকের আকাশের মালিকত্ত দিদার। আমাদের আকাশ ভাগ করে নিয়ে তারা গোনার খেলায় বিরক্তি পেয়ে ঋতু নীচে চলে গেল।
এতো বড়ো হয়ে গেলাম তবুও এখনো তারাদের নিয়ে খেলা করতে বেশ ভালই লাগে। আমার জন্মের আগেই দিদা দাদু দু'জনেই মারা গেছেন তাই তাদের ভালোবাসা কোনদিনও পায়নি কিন্তু মনের মধ্যে তাদের প্রতি এক অজানা মায়ার বন্ধন থেকেই গেছে, আজ ঋতুর দিদাকে পেয়ে কেন জানিনা নিজেকে আরও একবার বাচ্চা ভেবে নিতে ইচ্ছে করছে।
ছাদটাও বেশ সুন্দর করে সাজানো। প্যারাপেট ওয়ালে টবের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ লাগানো, প্যারাপেট ওয়াল বরাবর এক হাত জায়গা ছেড়ে দিয়ে ছাদের উপর বেশ কয়েকটি লোহার বাঁশ খাড়া করে দাঁড় করানো, সেই লোহার বাঁশ গুলি আবার উপর ও মাঝখানে লোহার রড দিয়ে জোড়া, এইসব লোহার রডের উপর থেকে ঝোলানো টবের মধ্যে লঙ্কা ক্যাপসিকাম বেগুন জবা আরও অনেকরকম ছোটো ছোটো চারাগাছ লাগানো, তিন দিকে বর্ডার করে খুব সুন্দরভাবে ঘেরা। এইরকম সুন্দর করে ছাদ সাজানোটা আমি এই প্রথম দেখলাম। মানুষের মনটা চাইলে সব পারে, তাইতো অবহেলায় পড়ে থাকা বস্তুর মধ্যে থেকেও নতুন নতুন বস্তুর সৃষ্টি হয়।

দিদা এভাবে গাছ লাগানোর বুদ্ধিটা কে দিল?

এটা তো ঋতুর কাজ। ছোটো বেলা থেকেই ওর সখের কোনো শেষ নেই। কোথা থেকে ওর মাথায় এইসবের বুদ্ধি আসে ওই জানে। সীমা একটা প্রশ্নের উত্তর দিবে?
প্রশ্নটা কেমন হবে না জেনে আমি কথা দেওয়ার সাহস করতে পারলাম না, চুপ করে থাকলাম।

দিদা বললেন,"তোমরা তো আধুনিক যুগের মানুষ তোমরা কি ভগবানে বিশ্বাস কর??"

অবশ্যই দিদা। নতুনের সঙ্গে পুরাতনের লড়াই হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু তাই বলে ভগবানের প্রতি আস্থা হারিয়েছি এটা একদম ভুল। অন্যের কথা বলতে পারবোনা কিন্তু আমার মন্দির মসজিদে আস্থা একটু কম। ঈশ্বরকে আমি মনের মন্দিরে খুঁজতেই বেশি ভালোবাসি।

অন্য এক ভালোবাসাWhere stories live. Discover now