একটু রোমান্স

159 5 4
                                    

The Romance
English translation is in below

যদিও এখন বাড়িতে কেউ নেই তবুও ঋতু একরকম জোর করেই ওর ঘরে টেনে নিয়ে গেল, দরজাটা বন্ধ করতে যাচ্ছিল বাঁধা দিয়ে বললাম "ঋতু তুমি কি কাজটা ঠিক করছো ?? তোমাকে তো আগেই বলেছি আমি লেসবিয়ান নই -----"
কথা না শুনতে পাওয়ার ভান করে ঋতু দরজাটা লাগিয়ে দিলো, আমি আবার কিছু বলতে যাচ্ছি দেখে ওর একটা হাত আমার ঠোঁটের উপর রেখে একটু কোমল স্বরে ফিসফিস করে বলল "ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম তুমি লেসবিয়ান না আর আমিও যে লেসবিয়ান এটাও তো জোর দিয়ে বলতে পারি না"
এরপর কিছুটা মৃদু হেসে নিয়ে আমাকে জ্বালানোর জন্যই তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে আমার মুখটাকে একটুখানি উঁচু করে ধরে ওর মুখটা আমার মুখের কাছে নামিয়ে এনে বলল "কিন্তু আমি যে তোমাকেই ভালোবাসি এ ব্যাপারেও তো আবার কোন সন্দেহ করতে পারছিনা" বলেই ঠোঁটের উপর হালকা করে একটা কিস করলো সঙ্গে সঙ্গে ওকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে বললাম "ভালোবাসা মানে সুযোগ নেওয়া নই"
এবার একটু কড়া গলায় বলল "শ্রেয়া বলে যে মেয়েটিকে মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছ আমাকে কি জানাবে মেয়েটি কে ?"

ওর মুখে শ্রেয়ার নাম শুনে একটু আশ্চর্যই লাগলো কারণ শ্রেয়ার কথা ভূল অক্ষরেও আমি কাউকে কোনোদিনও জানাইনি তবুও লাকিদা কি করে একদিন আমার আর শ্রেয়ার সম্পর্কের কথাটি জানতে পেরেছিল, আর আজ ঋতুও?? ঠিক বুঝতে পারছিনা কি হচ্ছে --

কোনো উত্তর না দিয়েই মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে থাকলাম, আমার চুপতি মেরে বসে থাকা দেখে ঋতুই বলতে লাগলো "যদি কেউ কাউকে সত্যিই ভালোবাসে তবে তার ভেতরের খবর পেয়েই যায়, তোমার মুখ দিয়ে আমার না শুনলেও চলবে কারণ তোমার ভেতরের প্রতিটি অনুভূতিকে আমি বুঝতে পারি।"
কিছুক্ষণ কি ভেবে নিয়ে বলল "আমি শ্রেয়ার নামটাই বা কি করে জানতে পারলাম এটাই ভাবছ তো??
একটা বড়ো নিঃশ্বাস ছেড়ে আবার বলতে লাগলো " জানো সীমা তোমার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের উপরেই আমার কড়া নজর থাকে, মেসের ওই শ্রেয়া মেয়েটিকে তুমি যখন বিনা কারণে বকাবকি করতে আমি তো একবার ভূল করে ফেলেছিলাম ওর সঙ্গেই তোমার কিছু একটা চলছে ভেবে, জানোতো স্বপ্নগুলোও কি সব ভূল ভাল আসতে শুরু করেছিল, একদিন ওকে ভয় দেখাতেও গিয়েছিলাম, বলেছিলাম "ঠিক আছে তোমার সীমাকে ভালো লাগতেই পারে কিন্তু তাই বলে যদি তুমি ওকে বিরক্তি করার চেষ্টা কর তবে বুঝতেই পারছো আমি তোমার কি হাল করতে পারি, আর হ্যাঁ এইসব ভালোবাসার স্বপ্ন দেখাটাও পাপ ---" সঙ্গে সঙ্গে ও বাধা দিয়ে বলল "ঋতুদি তুমি আমাকে বিশ্বাস করো আমি সীমাদিকে ভালোবাসার কথা ভূল করে স্বপ্নেও ভাবিনি, উনি সিনিয়র তার উপর উনি এতো বেশি কেয়ার ফুল উনাকে সম্মানটা মন থেকেই আসে, কলেজে যখন ভর্তি হই ভয় লাগত রাগিং এর কথা ভেবে কিন্তু সীমাদি যেভাবে সবকিছুতে সাহায্য করেছিল তাতে কোনো দিনও এটা মনে হয়নি আমারা কেউ নতুন জায়গায় এসেছি কিন্তু বিপত্তি ঘটল ওই দিন থেকে যেদিন আমাদের সবার ইন্ট্রো চলছিল, আমার নাম শুনে কি কারণে যে উনি ক্ষেপে উঠলেন তা বলতে পারবোনা, কিন্তু ওই যে সেদিন তিনি আমাকে ধমক দেওয়া শুরু করলেন ওটা এখনও চলছে।"
জানোতো সীমা ওর কথাগুলো শুনে মনে মনে কি যে খুশি লাগছিলো তোমাকে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা।
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে অন্য মনষ্ক ভাবে বলতে লাগলো "আসলে যাকে ভালোবাসি তার অতি সামান্য সুনাম শুনলেও মনে হয় পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটাকে বোধহয় আমিই ভালোবেসেছি। ভালোবাসা যে কাকে দিয়ে ঠিক কখন কি করিয়ে দেয় সেটা বলতে পারা সম্ভব নয় শুধু এটুকু বলতে পারি অসম্ভব কাজ গুলোই যেন জীবন হয়ে দাঁড়ায়, আর ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে একদিন সংসার বাঁধার স্বপ্নটাও যেন স্বর্গসুখ মনে হয়।"

অন্য এক ভালোবাসাWhere stories live. Discover now