প্রথম অংশ

706 2 5
                                    

ছয় বছর পর, আবার সেই মুখ! লম্বাটে মুখটায় প্রখরতা একটুও কমেনি, চোখদুটো আগের মতোই বুদ্ধিদীপ্ত, ঠোঁটের পাশের ভাজটা আজও আছে। ওজনও বেড়েছে কিছুটা। সেই ৪০ কেজির ছিপছিপে অর্পিতা আজ পরিপূর্ণ নারী। হঠাৎ করে ওকে দেখে চমকে উঠলাম।

ব্যাংক এশিয়াতে এসেছিলাম কিছু প্রয়োজনে। এখানেই অর্পিতার সাথে দেখা। হঠাৎ করে ছয় বছরের পুরনো ক্ষত গুলো সতেজ হয়ে উঠল, তবে পাত্তা দিলাম না। ওকে ডাক দিলাম, খানিকটা অবাক অর্পিতাও হলো।

প্রথম কথা অর্পিতাই বলল,

"এতো বছর পর! কেমন আছ তুমি?"

"মন্দ নেই। তুমি কী এখানে চাকরি করো?"

"হ্যাঁ, গতমাসে জুনিয়র অফিসার হয়ে জয়েন করেছি। তুমি এখানে এসেছ কেন?"

"আমার কিছু টাকা তুলতে হবে।"

আমার কাজে সাহায্য করল ও। অনেক কথাই হলো। ও অনেক দিন পর আমার প্রতি আগ্রহ দেখাল। কোথায় আছি, কী করছি, গার্লফ্রেন্ড আছে কী না, সব কিছুই জানতে চাইল। বললাম সবই। আমিও জেনে নিলাম ওর সম্পর্কে। BBA শেষ করেই ব্যাংকে ঢুকে গিয়েছে। বিয়ে করেনি, এখন কোনো বয়ফ্রেন্ড ও নেই ওর।

কৌতুহল দমাতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, "শুভর সাথে সম্পর্কটা টেকেনি?!"

অর্পিতা খানিকটা অপ্রস্তুত হলো। ছয় বছর আগে ওর সাথে আমার ব্রেকাপ হয়, আমাকে ছেড়ে যায় ও। শুভ নামের ঢাবির একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়ায়। ফেসবুকে ছবিতে দেখেছি, ছেলেটা আমার থেকে দেখতে সুন্দর। এখন বুঝি ডেটিং পুলে আমার থেকে শুভর দামটা বেশী ছিল। খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনাই ছিল, তবে অর্পিতার প্রতি আমার ইমোশনাল ইনভেস্টমেন্ট এতো বেশী ছিল যে ঘটনাটা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাছাড়া ও আমার জীবনে এখন পর্যন্ত প্রথম এবং শেষ নারী হওয়াতে ওর একটা আলাদা গুরুত্ব আছে আমার কাছে। রাস্তায় হেঁটে যাওয়া আর দশটা মেয়ের সাথে ওর তুলনা করতে পারি না। ও আজীবনই আলাদা থেকে যাবে।

ও শুভর প্রসঙ্গটা এড়িয়ে গেল। কোনো উত্তর করল না।

"শাওন, অফিসে তো দেখতেই পাচ্ছ খানিকটা কাজের চাপ আছে। তুমি একটা কাজ করো, তোমার নাম্বারটা আমাকে দিয়ে যাও, আমি তোমাকে পরে কল করব।"

যেসব রাতের নামWhere stories live. Discover now