২. আঁখির দুঃস্বপ্ন নাকি দূরদৃষ্টি?

590 64 25
                                    

গভীর রাত,

দ্বীপের বালুকাময় চর বেয়ে হেটে যাচ্ছে অতি সুদর্শন এক তরুণ। ভরা পূর্ণিমার আলোতে পরিপূর্ণ চারিদিক, তবু যেন কোনো কিছুই স্পষ্ট নয়। চারিদিকে কেমন একটা গুমোট বাতাস বইছে। সমুদ্রের ঢেউগুলি অবিরাম আছড়ে পড়ছে তীরের বালু-বেলায় আপন ছন্দে! এক স্বপ্নিল জগত যেন সে এক। রুপালী এক জাদু ছড়িয়ে দিয়েছে কে যেন চারপাশে!

কিন্তু ঠিক কোথায় যেন ছন্দপতন হচ্ছে, কোনো অলৌকিক কারণে সবকিছুই কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হয়। অস্বাভাবিকতাটা ধরা পড়ছেনা চোখে। একটু একটু করে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে।

আকাশের গোল বৃত্তের মত পূর্ণিমার চাঁদটাকে কেমন ছবির মত লাগছে। সমুদ্রের হালকা গুঞ্জন একটু করে কানে আসছে। সমুদ্রের হিমশীতল পানি ছেলেটির পা দুটিকে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। একি করছে ছেলেটা? সোজা সমুদ্রের দিকেই হেটে যাচ্ছে???

চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে ধীরে ধীরে। ভরা পূর্ণিমার আলোও সংকীর্ণ হয়ে আসছে। কিছু মেঘ গ্রাস করতে চলেছে সম্পূর্ণ চাঁদটিকে। সমুদ্রের ঢেউগুলোও আগের চেয়ে বড় হয়ে উঠছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এসব কি হচ্ছে?

ছেলেটি কোনো কিছুকেই ভ্রুক্ষেপ করছেনা। এগুচ্ছে তো এগুচ্ছেই। ঢেউগুলি বারবার তার পথ আগলে যেন তাকে বাঁধা দিতে চাইছে। ছেলেটি সে বাঁধা মানছেনা। চারিদিক কেমন এক ঘোলাটে অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে! মেঘ প্রায় পুরো চাঁদটিকেই গ্রাস করে ফেলেছে, তবু এর এক টুকরো আলো এখনো ছেলেটির পথ অনুসরণ করে চলছে।

ছেলেটা থামছেনা কেন?
ঢেউগুলি ক্রমশই কি ভীষণ ফুঁসে উঠছে! ও যতই এগুচ্ছে ঢেউগুলি ততই হিংস্র দানবের মত উন্মত্ত হয়ে উঠছে। ক্ষুধার্ত সমুদ্রটা বুঝি তাকে সহ সমগ্র দ্বীপটিকে শুষে ফেলবে এক নিমিষেই।

আঁখি জানেনা কেন, তবু তার মনে হতে থাকে, তার হৃদপিণ্ডটা কেউ শক্ত করে ধরে টান দিয়ে বের করে আনতে চাইছে....

সমুদ্রের পানি ছেলেটির বুক ছুঁই ছুঁই করছে! ঢেউয়ের ঝাপটায় তার চোখে মুখে পানি এসে পড়ছে বারবার! কিন্তু ছেলেটির চোখের পাতা পর্যন্ত পড়ছেনা! কোনো এক সম্মোহন তাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে গভীর সমুদ্রে..... আর আঁখি তার সমগ্র সত্তায় ছেলেটির জন্যে টান অনুভব করতে থাকে! কিন্তু সে কিছুই করতে পারেনা! বেদনায় ভরে যায় আঁখির হৃদয়ের সপ্তসিন্ধু!

আবিরের ডায়েরি তেপান্তরের বালুকায় [completed]Where stories live. Discover now