দেয়াল ঘড়ির পেন্ডুলামটা ঢং ঢং আওয়াজ করে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। ঘুমন্ত আবীরের পিটপিট করা চোখ আর মুখের উপর প্রশান্তির ছায়া বলে দিচ্ছে, খুব সুন্দর কোনো স্বপ্ন দেখছে সে।
হ্যাঁ দেখছেই তো,
আবীর আর আঁখি বাতাসে ভেসে যাচ্ছে উড়ে উড়ে। ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভিতর দিয়ে, বয়ে যাচ্ছে নাম না জানা কোন অজানা শহরের উদ্দেশ্যে। আকাশের শূন্যতার মাঝে কোনো এক বিচিত্র ধরণীতে।
ব্যস্ত নগরীর অলিগলিতে মানুষের নিজেদের স্বপ্ন ভাঙা গড়ার এক অদ্ভুত খেলা চলে। মাথা উঁচিয়ে কারো স্বপ্ন পূরণ হওয়ার দৃশ্য তাদের চোখে পড়েনা কখনো।
আঁখি হতবুদ্ধের মত তাকিয়ে দেখছে চারিদিক।
বাতাসে উড়ছে আঁখির গায়ের পাতলা কাপড়। তার ফিনফিনে কাপড়ের মাঝ দিয়ে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে তার মাখনের মত পেলব স্নিগ্ধ সৌন্দর্য।আঁখির হাত শক্ত করে ধরে আছে আবীর। যেন কিছুতেই হারিয়ে না ফেলে তাকে এই বিশাল শূন্যতার মাঝে। আঁখির কাছে কখনো যেন এ স্বপ্নের চেয়ে অবাস্তব বলে মনে হয়।
চারপাশে শুভ্র মেঘের কণারা ছাড়া আর কিছুই স্পষ্ট নয়, তবু সে যেন এক স্বপ্নের মাঝে এক বর্ণের ছটা। আর এক বর্ণের মাঝে এক স্বপ্নের দ্যুতি।
চারপাশে সারি সারি অসংখ্য বক উড়ে যাচ্ছে তাদের আশে পাশে, ডানা মেলে প্রশস্ত করে দিয়েছে চারিদিকে যতটা সম্ভব। আঁখি বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে আছে বকেদের বিস্তৃত সুবিশাল ডানার দিকে। আকাশের এতো উঁচুতে যে মেঘের ঠাণ্ডা শীতল কোমলতা ফুঁড়ে তারা উড়ে যেতে পারে মহাশূন্যে, তা আঁখির মোটেও জানা ছিলোনা।
বকেদের মেলে ধরা ডানা তার শরীরের তুলনায় এতোটা বিশাল হতে পারে, তাও সে জানতো না কোনোদিন।
সাদা বকেদের মত আঁখিও যেন নিজেকে প্রশস্ত করে দেয় সে নীলাম্বুর বুকে। তার গালের পাশ দিয়ে মেঘের ঠাণ্ডা স্পর্শ যেন জল হয়ে গড়িয়ে যায় শরীরের ভিতরে। সে যে কি এক ভালোলাগাময় মুহূর্ত তা আঁখি কিছুতেই বলতে পারেনা।
আকাশের বুকে নৈস্বর্গের সকল শুভ্রতা এসে ভর করেছিলো সেদিন, যেন এই দুই মানব মানবীর আগমনের অভ্যর্থনা জানাতে।
YOU ARE READING
আবিরের ডায়েরি তেপান্তরের বালুকায় [completed]
Science Fictionপ্রকাশিত: বইমেলা ২০১৮, রোদেলা প্রকাশনী। (Nominated for The Fiction Award (TFA) 2017) #Highest_Rank1 [for 1 year] ___মুহূর্তের মধ্যে মৃদু শব্দটা গগনবিদারী শব্দে রুপান্তরিত হল! প্রচন্ড শব্দে পুরো আকাশ যেন কাঁচের মত ঝনঝন করে ভেঙে পড়তে চাইছে! আঁখি কানে...