পাঠ-শূন্য : ৩৩,৩৩২ বছর পূর্বে

623 32 1
                                    

সাত সূর্যের গ্রহ 'অরিত্রিকা' একটু একটু করে অন্ধকার হয়ে আসছে। ড: এরিক কার্নেল স্পেস-শিপের স্বচ্ছ কোয়ার্টজ এর জানালার পাশে বসে শেষবারের মত আকাশের তারা দেখার অপেক্ষায় আছেন।

কাছের কোনো তারা নয়, দূর বহুদূরের কোনো নক্ষত্রমালা। হয়তো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কোনো নক্ষত্রপুঞ্জ। দূরের বেগুনী আভা নিভে ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছে চারিদিক। অন্ধকারের জ্যোতি বাড়ছে ধীরে ধীরে। অন্ধকারের সে জ্যোতি আলোর গতির চেয়ে তীব্র, আঁধারের সে গতি আলোর জ্যোতির চেয়ে দ্রুততর।

মাত্র ৫৩ মিনিটের জন্য রাত নামবে এ গ্রহে। প্রতি ১২ বছরে একবার রাত হয় এই সাত সূর্যের গ্রহে। ডঃ এরিক কার্নেল সময় দেখলেন, তার হাতে ৫২ সেকেন্ডের বেশি নেই। তার চারপাশে জোনাকের মত আলো জ্বলছে।

তার সময় শেষ। এই জীবনে তার জানার আর কিছু বাকি নেই। এই বিশ্ব জগতের আর কোনো রহস্য তার অজানা নেই। এই সৃষ্টি জগতের কাছে তার চাওয়ার মত আর কোনো কাঙ্ক্ষিত বস্তু নেই। সবকিছু পেয়ে গিয়েও তার হৃদয়ে অজানা কোনো এক বিশাল শূন্যতা এসে ভর করেছে।

মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছিলো ঠিক এভাবেই। যার ভিতরে রয়েছে অন্য এক মহাজগত। এক সীমাহীন মহা শূন্যতা। অল্প সময় পরে তার মৃত্যু হবে। তার শরীর এই জগতের মাটিতে মিশে গিয়ে বাড়িয়ে চলবে এই বিশ্বজগতের পরিধি। এই জগতের পরিব্যাপ্তি হবে আগের চেয়ে আরো ক্ষিপ্রতর, দুই জগতের মিলনে এ মহাজগত হবে আরো বিশালতর।

স্পেস-শিপের দরজা খোলা। ড: কার্নেল উত্তপ্ত মাটি উপেক্ষা করে হেটে চলেছেন অরিত্রিকার সৌন্দর্যের গভীরে। রাত নেমেছে আজ এ গ্রহে। বহু প্রতীক্ষিত রাত। আজ এ রাতে মৃত্যু হলেও তার আর কিছু এসে যায়না।

সৃষ্টিকর্তা ছাড়াও আরো কেউ যেন সে দৃশ্য দেখছিল সন্তর্পণে... দৃষ্টির অলক্ষ্যে থাকা অদৃশ্য কোনো শক্তি... অবয়বহীন... আকৃতি-হীন.. মৃত্যুহীন... ধ্বংস-হীন কোনো এক নিষ্ঠুর পৈশাচিক সত্ত্বা....

যার কোনো বিনাশ নেই, সৃষ্টি নেই, জন্ম নেই, যার প্রতিটা নিশ্বাসে লেখা মৃত্যু আর মানুষের আত্ম চিৎকার.....

#৩৩,৩৩২ বছর পর....

আবিরের ডায়েরি তেপান্তরের বালুকায় [completed]Donde viven las historias. Descúbrelo ahora