পাঁচ বছর পর। ফেব্রুয়ারী মাস, ২০১২ সাল।
এলার্মটা বেজে উঠল।আমি ঝট করে উঠে পরলাম।বিকাল পাচটা।
কি মিয়া, এত সাধের ঘুম থেকে উঠে পরলা?
হুম।টিউশানি।
ধানমন্ডি?
না, বনানী।
ফার্স্ট ইয়ারেরটা নাকি?
নাহ, এবার এস এস সি দেবে।
এটা আবার কবে শুরু করলা?
গত মাসে।
পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে না?
হ্যা।
তাহলে মাত্র দুই মাসের জন্য এই টিউশানি নিলা কেন?
টাকা।
মানে?
ছেলেটা টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করছিল। বাপের ভাল টাকা আর পাওয়ার আছে, তাই দিয়ে এস এস সি তে সেন্টাপ করছে।বুয়েটের একটা টিচার চাচ্ছিল, যাতে অন্তত সব বিষয়ে পাশ করে আসে।
আর তুমি সুযোগটা নিলা?
হুম।
কত দিবে দুই মাসে?
পচিশ।
টাকার অঙ্কটা শুনে রুমমেটের চোয়াল ঝুলে গেল। দুই মাসে পচিশ?সত্যি?
হ্যা।এজন্যইতো নিলাম টিউশানিটা।
টাকাপয়সা কিছু দিছে?
হুম।এখন পর্যন্ত দশ পাইছি।
গুড গুড, চালায় যাও।
আচ্ছা।
আমি বেরিয়ে পড়লাম। আজিমপুরে এসেই উঠে পড়লাম ২৭ নম্বরে। ধানমন্ডি, ফার্মগেট আর বনানীর ঐতিহাসিক জ্যাম পেরিয়ে অবশেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় এসে পৌছালাম ছাত্রের বাড়ি, টাকার হাড়িতে ।
স্যার।
বল।
আমি পরীক্ষায় পাশ করতে পারব না।
এসব আজেবাজে চিন্তা বাদ দিয়ে ভাল মত পড়।উপপাদ্যগুলা সব মুখস্থ হইছে।
মোটামুটি।
দেখি, তাহলে পীথাগোরাস আর সঞ্চারপথের উপপাদ্য দুইটা লেখা।
স্যার, সঞ্চারপথ আর পীথাগোরাস কখনো একসাথে আসে না। যেকোন একটা আসেনা।
বেশি কথা না বলে লেখ।
ছাত্র লিখতে শুরু করে।আমি পাশে বসে থাকি।
হঠাত করে কানে একটা মিষ্টি হাসির শব্দ আসে।আমি ছাত্রের দিকে তাকাই।
স্যার, আমার কাজিন।বেড়াতে আসছে।
ওউ।
ছাত্র আবার ঘাড় গুজে লিখতে থাকে, আমি পাশে বসে থাকি।অদ্ভূত এক নীরবতা।
কি ব্যাপার? এখনো নাস্তা আসছে না কেন? অন্যান্য দিনতো এই সময়ের মধ্যে নাস্তা চলে আসে।বিকালে কিছু খাওয়া হয়নি, খিদায় মারা যাচ্ছি।
পর্দাটা একটু নড়ে উঠল না। পর্দার কোন দিয়ে দিল ট্রে।
যাক, অবশেষে নাস্তা।
কিন্তু যার হাতে ট্রে ছিল তাকে দেখেই হঠাতই আমার হাসি উবে গেল। মায়া!
YOU ARE READING
তোমার বসন্ত দিনে ... ...
Romanceহলের দিকে পা বাড়াব, হঠাৎ যেন সময়টা থমকে দাঁড়াল।ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে প্রবেশ করল এক হলুদ শাড়ি। মাথায় গ্রীক দেবিদের মত গাদা ফুলের ক্রাউন, কোমরে গাদা ফুলের বিছা।কোমরে সমুদ্রের ঢেউ তুলে চলতে লাগল সামনের দিকে,আমি আর সেলিম অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আমি মেয়ে...