#ত্রয়ী
#শেষ পর্বলেখা : নীলা মনি গোস্বামী
ছুঁড়ে ফেলে দিলে পানির ভেতর।টলতে টলতে চলে এলো সামনের দিকে।চোখে মুখে তার পরম ক্লান্তির ছোঁয়া। নীতিশা দৌড়ে গেলো ত্রয়ীর কাছে। ধরে নিয়ে গেলো কেবিনের ভেতর।
রিয়ানার ছিন্নভিন্ন দেহটা তখনও ডেকের ওপর পরে ছিলো।সেদিকে তাকিয়ে ডুকড়ে কেঁদে উঠলাম আমি।রিকি এসে সান্তনা দিতে লাগলো আমাকে। আর অন্যরা ব্যাস্ত হয়ে পড়লো নিশানকে নিয়ে। অনেক রক্ত ঝড়ে পড়েছে ছেলেটার শরীর থেকে। দ্রুত কিছু না করতে পারলে মারা পড়বে সে।
কয়েক ঘন্টা পর...
নিশানকে বাঁচাতে পারিনি আমরা। মারা গেছে সে। মাত্র দু'ঘন্টা টিকেছিলো ছেলেটা।
রিয়ানার ছিন্নভিন্ন দেহটার পাশেই ওর লাশটাকে রেখে দিয়েছি আমরা।
বাইরে তখন প্রচন্ড ঝড়বাদল। বৃষ্টির অঝোড় ধারায় মুখরিত চারপাশ।লন্ঞ্চটাও অকেজো হয়ে গেছে হঠাৎ করেই। আটকা পড়ে গেছি আমরা সবাই।ছোট্ট কেবিনটার ভেতর জুবুথুবু হয়ে বসে ছিলাম সবাই। বুকের ভেতর স্বজন হারানোর বেদনা আর মনের ভেতর চাপা আতঙ্ক।
" পালিয়ে যাও সবাই। নাহলে বাঁচতে পারবে না কেউ" উদাস গলায় বলে উঠলো ত্রয়ী।
চমকে তাকালাম তার দিকে। ঠোঁট বাঁকিয়ে একটু হাসলো মেয়েটা। গা শিড়শিড় করা অদ্ভূত হাসি। তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো," ঐ গাছটা অলুক্ষুনে। ধ্বংস করে দিয়েছে আমার সব। সেদিন আমার শোয়েনকে খেয়েছে। ওর বিজ বুনে দিয়েছে আমার ভেতর। পিশাচীতে পরিনত হয়েছি আমি। তোমাদেরও শেষ করে দিবে সে। "- পিশাচী?????
সবগুলো দাঁতবের করে খনখনে গলায় হেসে উঠলো ত্রয়ী। ওর বিচিত্র লালচে হলুদ দাঁতগুলো দেখে শিউরে উঠলাম আমি। টের পেলাম চারপাশের পরিবেশটা হঠাত করেই নিরব হয়ে গেছে। কেমন যেনো একটা গুমোট দমবন্ধ করা পরিবেশ। শীত শীত লাগছে ভীষন।গম্ভীর হয়ে গেছে সবার মুখ।
ঘষটানোর মত একটা শব্দ এলো কানে। কেমন যেনো খসখসে... ভারী শব্দ।বাইরে পাটাতনের ওপর হচ্ছে শব্দটা - যেখানে নিশান আর রিয়ানার লাশটা রাখা ছিলো।