সুরের বাঁধনে ১

1.8K 49 10
                                    

তানভীর মূল ফটকটা পেরিয়ে সেগুন কাঠের কারুকাজ করা ভারি দরজার  কাছে আসতেই, মোজাইকের সিড়ির উপর বসা জার্মান শেফার্ড দুটো দ্রুত বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে ওকে দেখে চিৎকার শুরু  করার আগেই পাশে বসা গার্ডটি তাড়াতাড়ি কুকুর দুটোকে সরিয়ে নিয়ে গেল অনাত্র।

তানভীর ধীর পায়ে তার শ্রদ্ধেয় আমজাদ হোসেন স্যারের বাসার বিশাল ড্রাইংরুমের একপাশের সোফায় চুপটি করে গিয়ে বসল।

বাসাটা একদম নীরব। বেলা এখন প্রায় দশটা বাজে। ছিট ছিট বৃষ্টি হচ্ছে সেই সকাল থেকে। তারপরও নীরবতাটা কেমন যেন ওর স্নায়ুর উপর উদ্ভট একটা চাপ তৈরী করছে।

একজন মহিলা এসে ওকে একগ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে চলে গেল। তানভীর পানিটা খেয়ে আবার অপেক্ষা করতে লাগল। আমজাদ হোসেন স্যার নিজে ওকে ডেকেছেন। মেসেজে ওকে  বাসায় আসতে বলেছেন দ্রুত। কেন, কী কারন কিছুই তানভীর জানে না। শুধু জানে ব্যাপারটা ভীষন ব্যাক্তিগত। এটাই উল্লেখ করেছেন স্যার মেসেজে।

এরমাঝে হুরমুড় করে একটা মেয়ে দোতালার সিড়ি বেয়ে নেমে ডাইনিং এর কোনায় রাখা ফ্রীজের পাল্লাটা খুলে বড়ো একটা ঠান্ডা পানির বোতল বের করল। এরপর দরজাটা আটকে দিয়ে আবার কী মনে করে যেন খুলল। তারপর চট করে আবার কী একটা বের করে ওটা থেকে কোন ধরনের খাবার মুখের মধ্যে গুঁজে দিল। তানভীরের চোখদুটো ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় মেয়েটাকে অনুসরন না করে পারল না। মেয়েটাকে ভদ্রভাষায় বললে যথেষ্ট স্থূল বলা যায়। কানের দুপাশে দুটো বড়ো বড়ো বেনী, মুক্তামালার মতো কোমরের কাছে গিয়ে দোলনার মতো দোল খাচ্ছে। কিন্তু  ফ্রিজের আলো মুখের উপরে পড়ায় তার চশমার আড়ালের চোখ দুটো ভাল করে বোঝা গেল না। তবে সে যথেষ্ট ফর্সা এটা সহজেই আন্দাজ করা যাচ্ছে।

মেয়েটা ফ্রিজের পাল্লা বন্ধ করে ঘুরে দাঁড়াতেই, তানভীরের দিকে চোখ পড়ল সরাসরি। থতমত খেয়ে মুখের খাবারটা গলায় আটকে যাবার অবস্থা মেয়েটার। আর একটু হলেই হাতের পানির বোতলটা ঠিক নিচে পড়ে ভেঙ্গে যেত। ঠিক তখনই কাজের মহিলাটা বলে উঠল, "পুনম আপা ওই স্যার বড়ো স্যারের সাথে দেখা করতে চায়। স্যার নাকি ওনাকে আসতে বলছেন।"

সুরের বাঁধনে Where stories live. Discover now