পরদিন মিতুকে প্রায় জোর করেই ওদের সাথে বসুন্ধরা সিটিতে নিয়ে এল তানভীর ।
সকালে থেকে হঠাৎ মিতু নিজের ঘরের দরজা আটকে বসে ছিল। সে নাকি বাসার কারো সাথে কোনো কথা বলবে না, এমনকি সকালের নাস্তাটা পর্যন্ত খায়নি।
আফরোজা বেগম অসহায় দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে ছিলেন, একটা মাত্র মেয়ে তার বড়ো আদরের। শেষ পর্যন্ত তানভীর গিয়ে কথা বললে দরজা খুলে বের হয় মিতু।
তানভীর কী করে মিতুকে রাজি করাল জানে না পুনম, তবে শেষপর্যন্ত গম্ভীর মুখে ওদের সাথে বিয়ের কেনাকাটা করতে আসতে রাজি হয়েছে মিতু।
মিতুকে এমন মুডে দেখে পুনম প্রথমে ভয়ে কথাও বলতে পারছিল না। এরকম পরিস্থিতির সাথে একেবারেই পরিচিত নয় ও। বাবা - মায়ের একমাত্র সন্তান ও, জীবনে কোন জিনিস পেতে পুনমকে মুখ ফুটে কিছু বলতে হয়নি কোনদিন, বাপি তার আগেই সব এনে হাজির করতো ওর সামনে। এমনকি চলে যাবার আগেও পুনমকে দেখে রাখার জন্য একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবকের ব্যবস্থা করে গেছেন আমজাদ সাহেব। দুনিয়ার ঝড় ঝাপটার সত্যিকারের চেহারাটা তাই একেবারে নতুন পুনমের কাছে।
মিতুর এমন আচরনে ভিতরে ভিতরে ভয়ে একদম সিটিয়ে গেছে পুনম। মিতু সরাসরি ওকে কিছু বলেনি এটা ঠিক কিন্তু কোন অন্যায় না করেও পুনম কিভাবে যেন মিতুর শত্রুপক্ষ হয়ে গিয়েছে। এটা ভাবতেই দারুন কষ্ট হচ্ছে পুনমের।
"এতো দুশ্চিন্তা করো না তো। আপুকে আমি ম্যানেজ করে নিব। শুধু আমি যা করতে বলব সেটা অনিচ্ছার সাথে হলেও একটু করতে হবে তোমাকে," তানভীর মুখটা পুনমের কানের কাছে নামিয়ে নিয়ে ফিসফিস করে বলল।
ওরা তখন দোতালার সিড়ি বেয়ে নামছে।
মন খারাপ না থাকলে এমন ফিসফিস করা কথায় একটু - আধটু কেঁপে উঠতে পুনম, কিন্তু এখন পুনমের সব অনুভূতি গুলোই ভীষন ভোঁতা মনে হচ্ছে।
"না... না.. কী বলছেন, অনিচ্ছার সাথে কেন করব? উনি সম্পর্কে আমার মুরুব্বি হন আর আপনার বোন, মিতু আপু যা পছন্দ করেন সেটাই করবো। "