তয় পর্ব

666 36 8
                                    

"পুনম আই অ্যাম সরি।"

বিষন্ন কন্ঠে নিজের অপারগতার কথা জানাল তানভীর।

তানভীরের কথায় পুনমের হৃৎপিণ্ডটা এত জোরে লাফিয়ে উঠল যে, আর একটু হলে ওর হাত থেকে ভাতের বোলটা পিছলে নিচে পড়ে যেত।

নিজেকে মনে মনে বেশ জোরেশোরে একটা ধমক দিল পুনম। এত লাফালাফি, কাঁপাকাপির কী আছে? ওতো আগে থেকেই জানতো যে তানভীরের পরিবার ওকে মেনে নিবে না। কোন না কোন অজুহাত দেখিয়ে ঠিকই তাদের ছেলেকে ওর খপ্পর থেকে ছাড়িয়ে নিবে।

"আপনি সরি কেন বলছেন? এতে আপনার দোষ কোথায়? আপনি তো আসলে কিছুই জানতেন না এ ব্যাপারে। বাবা অনুরোধ করে বললেও আসলে তো বিয়েটা এক ধরনের জবরদস্তি ছিল। হোক সেটা ভালোবাসার জবরদস্তি,কিন্তু তারপরও জবরদস্তি  আর এই জবরদস্তির কাছে মানুষ হেরে যায়। আমি আপনার পরিবারের এতে কোন দোষ দেখি না আর আপনার তো  একদমই না। আপনি খুব ভালো একটা মানুষ, আপনি আমার বাবার জন্য যা করেছেন আমি সেজন্য আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব," পুনমের গলা আবেগে কাঁপছিল।

"ধন্যবাদ, আমার উপর এতটা বিশ্বাস রাখার জন্য। এখন তাহলে তোমার ব্যাগপত্র গুছিয়ে নাও।"

"ব্যাগ! ব্যাগ কেন? " পুনম হতবাক হয়ে জানতে চায়।

"তোমার কাপড় কি তুমি হাতে করে নিয়ে যাবে?"

" না, কিন্তু আমি কোথায় যাব? "

" আর কোথায়... আমাদের বাসায় যাবে।"

"আপনাদের বাসায়!"

পুনমের হৃৎপিণ্ডটা ঢাকের মতো গুঢ়গুঢ় করে বাজতে লাগল।

"না পুনম, ওটা এখন তোমারও বাসা। আমাদের বাসা। কিন্তু আমি খুবই দুঃখিত যে আমি তোমার কাছে এক সপ্তাহ সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা রাখতে পারলাম না। আমি আমার বাবা-মায়ের সামনে আমাদের বিয়ের কথাটা বলতে পারিনি এখনও।"

"কিন্তু তাহলে আমাকে ও বাসায় কী পরিচয়ে  নিয়ে যাবেন? আ.. আমি তো কিছু বুঝতে পারছিনা।"

"আগে চল তারপর বলছি।"

পুনম বড়ো বিপদে পড়ে গেল। তানভীরের কথা ও ফেলতেও পারছেনা আবার রাখতেও বাঁধছে। তানভীর নিজে থেকে ওকে শ্বশুড়বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছে, এখন পুনম যদি সেখানে না যায় তাহলে পরে কোন মুখে ওখানে যাওয়ার কথা তুলবে ও। অগত্যা কাঁপতে কাঁপতেই তানভীরের সাথে ও বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাগে কাপড় ঢোকাল ও।

সুরের বাঁধনে Where stories live. Discover now