১০

643 40 17
                                    

বিয়ে!

পুনম মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইল ডায়েরী হাতে নিয়ে। ওর নিখোঁজ চিঠিটাই বলে দিচ্ছে যে ওটা তার গন্তব্যস্থলে চলে গিয়েছে। কিন্তু ভয়ের বিষয় হলো সঠিক সময়ের আগেই চিঠিটা তার মালিকের কাছে পৌছে গিয়েছে। পুনম মনে মনে অনেকভাবে ঘুরিয়ে পেচিয়েও তানভীরকে দেয়ার মতো যুতসই কোন উত্তর খুঁজে বের করতে পারল না।

ড্রইংরুমে বসে যখন ওদের আবার বিয়ের নাটক করতে হচ্ছিল পুনম তখন দুঃশ্চিন্তায় ঠিক মতো কিছু দেখছিলই না। তানভীর যে আড়চোখে বার বার ওকে দেখছে পুনম সেটা বেশ বুঝতে পারছিল কিন্তু পুনম আজ সেই দৃষ্টিতে ভালোবাসার বদলে বারুদের বিস্ফোরন দেখছিলো। আজ বুঝি সেই আগুনে সব পুড়বে, আর তাতে প্রথমে  ভস্মীভূত হবে পুনমের মন।

বিয়ের পর পুনমকে সোজা তানভীরের রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। তানভীরের রুমে এর আগে  ঠিক আসা হয়নি পুনমের, দু একবার শুধু দরজার গোড়ায় দাঁড়িয়ে কথা হয়েছে। এখন বিছানায় বসতেই পুনমের হাত পা কাঁপতে লাগল, কিন্তু সেটা লজ্জায় নয় ভয়ে। ও কী করতে চাইল আর কী হলো। মাঝখান থেকে অর্পার এ বাড়িতে বউ হয়ে আসাটাও বোধহয় বরবাদ করে দিল পুনম।

পুনমের ভয়কে আরও শত সহস্রগুন বাড়িয়ে দিতেই ঘরে ঢুকে দরজাটা ভাল করে আটকে দিল তানভীর। তারপর সোজা একটা চেয়ার টেনে পুনমের সামনে এসে বসল, ঠিক প্র্যাকটিকাল পরীক্ষার এক্সামিনারের মতো।

"আমি ধৈর্য ধারনের শেষ পর্যায়ে আছি।  অতিরিক্ত কথা বলার মতো মানসিকতাও নাই, তুমি কি কিছু বলতে চাও পুনম?"

পুনমের মনে হলো আকাশ ভেঙে পড়ল বিকট শব্দ করে।

তানভীরের থমথমে মুখভঙ্গি দেখে পৌষের কনকনে  ঠান্ডার মধ্যেও পুনমের বুকের ভিতরে সাহারা মরুভূমির লু হাওয়া বইতে শুরু করলো। তানভীরকে ও কী বলবে আর কীভাবে?
মুখ খুলতেই নিজের দাঁতের কটকট করে বারি খাওয়ার আওয়াজ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিল পুনম।

"কিছুই কী বলার নেই?"

বিষাদময় একটা সুর কানের পর্দায় এসে আছড়ে পড়ল পুনমের। বুকটা কি ব্যাথায় ছিড়ে যাবে ওর?

সুরের বাঁধনে Where stories live. Discover now