যদি...

15 3 0
                                    

আজকে কক্স বাজারের ফ্লাইট থেকে নেমে বিমানবন্দরের বাইরে দেখলাম একটা দম্পত্তি। মেয়েটি বোধহয় অন্য কোথাও থেকে ঢাকায় ফিরেছে, কক্স বাজার থেকেই কিনা জানি না কারণ আমার ফ্লাইটে ছিলো কিনা খেয়াল করি নি। মেয়েটির হাতে ছিলো একটা লাল গোলাপ আর ছেলেটি তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো বেশ কিছুক্ষণ। জড়িয়ে ধরেই ছেলেটি যেন কি বলছিলো আর মেয়েটির মাথায় হাত বুলাচ্ছিলো। দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো যেন তাদের বেশ কয়েকদিন পরে দেখা হয়েছে। আবার এমন‌ও হতে পারে এই দিনটি কোন একজনের জন্মদিন কিংবা বিবাহ বার্ষিকী।

আমি যতক্ষণ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম ততক্ষণ তাদের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। আসে পাশে আমার দিকে কেউ তাকিয়ে ছিলো কিনা তোয়াক্কা করি নি। যার ইচ্ছা হয় দেখুক, যাদের দিকে তাকিয়ে আছি তারা দেখলেও দেখুক। কোন অপরাধ তো আর করছি না আর তারা যদি এসে জিজ্ঞাসা করে তাহলে সত্যিটাই বলে দেবো। ভয়ের তো আর কিছু নেই।

তাদের দুইজনের‌ই পরণে ব্লেজার-সুট ছিলো। দুজনেই পরিপাটি, মেয়েটির চুল একদম সরু আর লম্বা, চুলগুলো খোলা ছিলো। ছেলেটির মাথায় চুল থাকা আর না থাকা এক‌ই কথা। না, টাক ছিলো না। একদম ছোট করে আর্মি কাট দেওয়া আর কি।

কিছুক্ষণ পরেই তাদের গাড়ি চলে আসলো, মাল পত্র সব নিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেলো। আমি আরো বেশ খানিকক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম সেখানে। তাদেরকে দেখে অল্প কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমি কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। আমার‌ও যদি এমন কেউ থাকতো, অফিসের প্রোগ্রাম শেষ করে ফিরবে আর তার জন্য আমি সেজেগুজে এসে অপেক্ষা করবো। কখন তার ফ্লাইট নামবে, কখন ব্যাগ নিবে, কখন বাইরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খাবে। ইশশ, আমার‌ও যদি এমন কেউ থাকতো!

ফ্লাইটে একটা ছেলে ছিলো, বেশ সুন্দর দেখতে। সুন্দর কেন বললাম জানি না। চশমা পড়া ছিলো, মুখে মাস্ক, একটা সোয়েটশার্ট আর ট্রাউজার। কক্স বাজার বিমান বন্দরেই তাকে দেখেছিলাম। সুযোগে সুযোগে বারবার তাকাচ্ছিলাম। সে আমাকে দেখছিলো কি না জানি না কারণ চশমা পড়া থাকলে দূর থেকে চোখের দৃষ্টি কোন দিকে সেটা বোঝা যায় না গ্লাসের ফাক দিয়ে। যাই হোক পরে ডাক আসলো, প্লেনে যাওয়ার জন্য বোর্ডিং পাস নিয়ে তৈরি হয়ে গেলাম। প্লেনের কাছে গিয়ে দাড়ালাম, প্রচণ্ড বাতাস বয়ে যাচ্ছিলো। বাতাসটাকে উপভোগ করার জন্য কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকলাম, আসে পাশে তাকাচ্ছিলাম আর দেখছিলাম সবাই ব্যস্ত যার যার মত। নিজ দায়িত্বে টিকেট আর বোর্ডিং পাসের সাথে প্লেনের সিড়ি বেয়ে উঠছিলো। ঠিক এভাবেই চারিদিকে চোখ ঘুরাতে ঘুরাতে দেখলাম এক দল বন্ধুদের, তারা ব্যস্ত ছিলো একে অন্যের ছবি তোলা নিয়ে। মাঝে কাকে দাড় করিয়ে যেন তার ছবি তোলা হচ্ছিলো, আমি খুব আগ্রহের সাথে তাকিয়ে ছিলাম, ছেলেটা যদি একবার ঘুরে তাকায়। ব্যাস কাহিনী হয়ে গেলো।

স্বপ্নপুরী (Completed)Место, где живут истории. Откройте их для себя