বন্ধু - তুই আর আমি

40 5 0
                                    

- আবীর? কি রে? জল্দি কর? কি মেয়ে মানুষের মত সময় লাগাচ্ছিস তৈরি হতে!
- দাড়া, ছেমড়ি। চেচাস না, আসছি।
- তাড়াতাড়ি, দেরী হলে তোর খবর আছে।

আবীর তঢ়িঘরি করে ঘর থেকে বের হলো। কোন রকম মুখ ধুয়ে, কাপড় পড়ে, একটা রুটি মুখে দিয়ে রিশার সামনে গিয়ে দাড়ালো। আবীর কে দেখে রিশা রাগে ফেটে না গিয়ে পাগলের মত হাসতে শুরু করলো।

- কি রে, হাসোস কেন?
- দাড়া হেসে নেই, বলছি।
- খ্যাক খ্যাক করিস না তো, দাঁত গুলা কি হলুদ হয়ে আছে! ওই দাঁতে খ্যাক খ্যাক করলে সাতচন্নির মত লাগে দেখতে।

রিশা তার হাসি থামালো, আবীরের চোখে চোখ রাখলো আবার হেসে দিলো।

- তুই থামবি?
- কিভাবে থামবো? তোর মত জোকার সামনে দাড়িয়ে থাকলে হাসা বন্ধ করি কিভাবে বল তো?
- জোকার কাকে বলিস? হ্যা?
- কাকে আবার? যার মাথার চুল এবড়ো থেবড়ো, শার্টের বোতাম উল্টা পাল্টা ভাবে লাগানো, প্যান্টের চেন খোলা, দুই পায়ে আলাদা আলাদা দুইটা মুজা তাকেই জোকার বলি।

বলতে বলতে আবার হাসা শুরু করলো। আবীর জল্দি আগে প্যান্টের চেন লাগালো তারপর বিড়বিড় করে কি বলতে বলতে যেন বাকি সব ঠিক করতে যাচ্ছিলো তখন‌ই রিশা আটকালো। রিশা নিজের হাতে আবীরের মাথার চুল ঠিক করে দিলো, শার্টের বোতাম গুলো ঠিক ভাবে লাগিয়ে দিলো, পায়ের এক জোড়া মোজা ব্যাগ থেকে বের করে দিলো আবীরকে পড়ার জন্য আর নিজের অর্ধেক খাওয়া নাশতা আবীরের হাতে তুলে দিলো।

- আমার দাঁত না দেখে নিজের দিকে একটু খেয়াল করলেই পারিস, তাহলে আর প্রতিদিন জোকার হতে হয় না তোর।
- তুই যেভাবে ডাকাডাকি শুরু করসিস, যা যেমনে পারসি পড়ে চলে আসছি।
- ভালো হয়েছে, এবার নাশতাটা খেয়ে নে।
- খাবো না, তুই খাস নাই কেন?
- কারণ আমি জানি তুইও খাস নি তাই আমি তোর জন্য নাশতা নিয়ে এসেছি। এবার খেয়ে আমাকে ধন‌্য কর।
- তোকেও সাথে খেতে হবে।

আবীর রিশার মুখে খাবার তুলে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিলো। দুজন খেতে খেতে, একজন আরেকজনের চুল টানতে টানতে কলেজে চলে গেলো।

পঞ্চম শ্রেণী থেকে আবীর আর রিশা একসাথে পড়ছে। প্রথমে একজন আরেকজনকে একদম সহ্য করতে পারতো না, এখন একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারে না। কারো কিছু হলেই হয়েছে, আরেকজন উঠে পরে লেগে যায়। এখন পর্যন্ত তারা একসাথে আছে। কলেজের শেষ বছর, পরিকল্পনা অনুযায়ি এক‌ই সাথে বাকি পড়াশোনা করবে। দুজনের‌ই ইচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। আবীর পড়তে চায় কলা ভবনে আর রিশা, রিশা সেখানেই থাকবে আবীর যেখানে থাকবে।

স্বপ্নপুরী (Completed)Dove le storie prendono vita. Scoprilo ora