পর্ব ২

35 4 0
                                    

আয়নার প্রতিবিম্বের মধ্য দিয়ে যে ঘড়িটা দেখা যাচ্ছে, ওটার কাঁটা ১০ টা ৫ এ আঁটকে এক স্থানেই কাঁপছে। অথচ ঘরের দেয়ালে ঝোলানো বাস্তবিক ঘড়িটা সামনের দিকে চলছে!

এটা কী করে সম্ভব?

আমি আয়নার সামনে থেকে সরে দাঁড়ালাম।

মধ্য রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় আমার মস্তিষ্ক হয়তো অযৌক্তিক চিন্তা ভাবনা করছে। আমি চোখ বন্ধ করে কয়েক মিনিট চুপচাপ  দাঁড়িয়ে মনকে স্থির করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু মন অস্থির হয়ে আছে। মনে হচ্ছে কেউ একজন আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরটা ছটফট করছে চোখ খুলে দেখার জন্য।

আমি নিজেকে বুঝালাম, এ রুমে আর কারো আসা সব রকম যুক্তিতেই অসম্ভব।

দরজা বন্ধ।

জানালা বন্ধ।

কোনো চোর ডাকাত আসার সুযোগও নেই। এ বয়সে ভূত প্রেতের ভয় পাওয়াটা হাস্যকর।

আমি প্রচণ্ড অস্বস্তি নিয়ে এক থেকে একশ বিশ অবধি গুনলাম। দু’মিনিটেও অস্বস্তি দূর হলো না। আরেক গ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম।

লাইট জ্বালিয়ে রেখেছি। বিষয়টা নিজের কাছেই হাস্যকর লাগছে। জানালার কাছে নারিকেলের পাতা ঠকঠক শব্দ করছে, আঁচড় কাটছে। বাতাসের শো শো শব্দ হচ্ছে। দেয়ালের ঘড়ি চলছে। সময় দেখাচ্ছে দশটা বেজে দশ মিনিট।

আমি মোবাইলের পাওয়ার বাটন চেপে ডিসপ্লে অন করলাম।

আশ্চর্য!

মোবাইলে সময় দেখাচ্ছে ২ টা ৪৪!

অমন সময়ে জানালায় একটা বিকট শব্দ হলো। কেউ একটা লাঠি দিয়ে আঘাত করার মতো শব্দ। আমি চোখ বন্ধ করে কয়েক মিনিট শুয়ে থাকলাম। অস্বস্তি লাগছে। পরপর তিনবার জানালায় একই শব্দ হলো। হয়তো গাছের কোনো একটা ভারী অংশ বাতাসে আলাদা হয়ে জানালার কাছাকাছি কোথাও ঝুলছে।

অস্বস্তি কাটিয়ে একটু স্বাভাবিক হওয়ার জন্য আমি উঠে জানালা খুললাম। বাতাসের প্রচণ্ড এক ধাক্কায় সারা ঘরের সব জিনিসপত্র ঝুমঝুম শব্দে নড়ে উঠল।

যা ভেবেছিলাম তা-ই।

একটা নারকেল গাছের ডাল ভেঙ্গে উপরে কোথাও একটা আটকেছে। আর ডালের একটা অংশ জানালার সামনেই বাতাসের তোড়ে এদিক ওদিক নড়ছে।

প্রতিবিম্বWhere stories live. Discover now