পর্ব ১৪ ও অন্তিম পর্ব

17 4 0
                                    


“আপনার বাবা তাহলে বেঁচে আছেন? কোথায় আছেন উনি?”

আমার প্রশ্ন শুনে সুলতান চাচা নির্বোধের মতো হাসলেন। হেসে বললেন, “আব্বায় তো কারও লগে কথা কয় না। মাতায় ডিশটাব।“
অল্প থেমে উনি বললেন, “আব্বারে আফনে ক্যামনে চিনেন?”

“ওসব আপনার না জানলেও চলবে। আমায় বলেন উনাকে কোথায় পাবো?”

উনি আমার দিকে তাকালেন কয়েক মুহূর্ত। তারপর পেছনে ফিরে পাশের রুমের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বললেন, “আহেন...”

আমিও পিছুপিছু এগিয়ে গেলাম। পাশের রুমের দেয়ালের সাথে থাকা কাঠের আলমিরা ঠেলে সড়িয়ে আমার দিকে তাকালেন। তবে কি এখানে কোনো সিক্রেট প্যাসেজ আছে? গুপ্ত কুঠুরীতে যাচ্ছি আমরা? ইন্টারেস্টিং!

আগ্রহ নিয়ে সামনে যেতেই অদ্ভুত শব্দ করে আমায় একটা ধাক্কা দিলো সুলতান চাচা!

প্রায় ৭-৮ ফুট নিচে গিয়ে এমন ভাবে পড়লাম, মনে হচ্ছে মেরুদণ্ড টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে গেছে। নুড়ি পাথরের মতো গুড়োগুড়ো ইট পাথর ছিটানো অমসৃণ মেঝেতে শুয়ে উপরে তাকিয়ে দেখলাম -এখানে ঢুকার মুখটা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। ব্যথায় আর আতংকে কঁকিয়ে উঠলাম। আর্তনাদের এ শব্দ বাহির পর্যন্ত গেল না। ভয়ংকর অন্ধকার, শব্দহীন আর দুর্গন্ধময় একটা কক্ষে আহত হয়ে পড়ে রইলাম দীর্ঘ সময়।

অপেক্ষার ধৈর্য ফুরিয়ে এসেছে। এর মাঝে বেশ অনেকবার সুলতান চাচাকে ডাকার চেষ্টা করলাম। এখান থেকে কোনো শব্দই বাইরে যাচ্ছে না। শুনতে পেলেও আমায় ছেড়ে দিত -এমন কল্পনা করছি না। শুধুমাত্র মনটাকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। এক কোটি প্রশ্ন মনে আর ভয়ানক মাত্রার দুর্গন্ধ নাকে জমে আমার নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছে।

লোকটা আমায় এখানে এভাবে আটকে রাখলো কেন?

ঘরটাকে প্রথমে যতটা অন্ধকার মনে হচ্ছিল -এ মুহূর্তে তা লাগছে না। অল্প আলোয় আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে চারপাশ।

এ বিষয়টা অবশ্য মানুষের চোখের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। আলো থেকে হুট করে অন্ধকারে এলে মানুষ প্রথমে কিছুই দেখতে পায় না। অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের চোখ অন্ধকারে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এবং সে অন্ধকারে নগণ্য পরিমাণে হলেও দেখতে শুরু করে।

প্রতিবিম্বWhere stories live. Discover now