আদাবর হোটেলের গার্ড রায়হান চাচার ঘাড়ে সাইনবোর্ডের টিনের আস্তর খুলে পড়েছে। শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে মাটিতে পড়ে আছে। অপর পাশে শুয়ে আছে মস্তকহীন দেহ। এ দৃশ্য দেখার আতংকে চোখ বুজতে পারছি না বেশ অনেকদিন। আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়তো এটাই। একজন মানুষের ছোট্ট শরীর থেকে এত রক্তও বেরিয়ে আসা সম্ভব?
অনেক চেষ্টা করেও ইদানিং ঘুমোতে পারছি না। চারপাশ আশ্চর্যরকম নীরব লাগছে। ঘড়ির দিকে তাকাই। সময় থামে না। কখনো উল্টোও চলে না। আয়নার সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কখনো থমকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করি কোনো পরিবর্তনের। একটা অদ্ভুত ভ্রমের মধ্য দিয়ে সে কয়েকদিন কাটিয়ে এসেছি। আর এখন তা ফিরে আসবে কি না -সে অস্বস্তিতে দিনানিপাত হচ্ছে।
এ কয়েকদিনের চেষ্টায় দুষ্প্রাপ্য কিছু দৈনিক পত্রিকা উদ্ধার করা গেছে। ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো পত্রিকা পাওয়া না গেলেও ১৯৮১ সালের নভেম্বরের একটা পত্রিকা খুঁজে পাওয়া গেছে যেখানে একটা ছোট্ট কলামে আদাবর হোটেল উদ্বোধনের সংবাদ রয়েছে। এই অসাধারণ বিষয়টা খুঁজে বের করার মতো জাদুকরি কাজটা করেছে আমার ক্লোজ বড়ভাই, ইদানিংকালে টেলিভিশনে জনপ্রিয় অপরাধ বিষয়ক রিপোর্টার আবু নাছের। ডাকনাম নিশান।
নিশান ভাই আমার কলেজ জীবনের ঘনিষ্ঠ বড়ভাই। একই কলেজে পড়েছি। একই মেসে পাশাপাশি রুমে থাকতাম। কলেজ জীবন শেষ করে ভাইয়ের সাথে দেখা হলো প্রায় ৭ বছর পরে। এতবছর পরে দেখা হওয়ার পরও দুজনের কারোরই সমস্যা হলো না অপরকে চিনতে। কিন্তু নিশান ভাই একটু অবাকই হয়েছিলো ওনার জনপ্রিয়তার কথা আমি না জানায়। শেষ কবে টেলিভিশন দেখেছিলাম মনে পড়ছে না। অপরাধ বিষয়ক সংবাদ বহু দূরের বিষয়!
নিশান ভাইয়ের জনপ্রিয়তার পরিচয় করিয়ে দিয়েছে মির্জা হাসিব ইমতিয়াজ, আদাবর হোটেলের ম্যানেজার। রায়হান চাচার মৃত্যুর পরবর্তীতে অপর রিপোর্টারের সাথে নিশান ভাইও সেখানে উপস্থিত হয় এবং আমি আর নিশান ভাই মিলেই ইমতিয়াজের হোটেলে ঘটা পরিস্থিতি সামলে নিই। নিশান ভাই না থাকলে থানার কর্মরত পুলিশ অফিসার ভিন্ন মতলব এঁটে বসতো।
YOU ARE READING
প্রতিবিম্ব
Horrorপড়তে চাইলে অবশ্যই সময় নিয়ে পড়ুন, আজকে অল্প কালকে অল্প এভাবে পড়লে কাহিনী একটু গুলিয়ে যেতে পারে। বাকিটা আপনাদের ওপরে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ। ^^