পর্ব ৪

35 4 0
                                    


আয়নার মধ্যে আমার প্রতিবিম্ব কাচের ভাঙা টুকরোগুলো মুখে নিয়ে চিবুতে শুরু করলো। আমার মুখ, জিব, গলা কেটে অনর্গল রক্ত বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ আমাকে খুব ধীরে জবাই করছে। আমি মেঝেতে পড়ে অনবরত ছটফট করছি। ভয়ানক কষ্টে আমার ভেতরের সব কিছু খুবলে যাচ্ছে।

বালিশে মাথা গোঁজা অবস্থায় ছটফট করতে করতে চোখ মেললাম। গলায়, মুখে, বুকে হাত দিয়ে দেখছি -সব ঠিক আছে।

কিন্তু আমার সাথে এসব কী হচ্ছে?

অস্বস্তি আর ক্লান্তি নিয়ে চোখ বন্ধ করতেই ঠোঁটে সেই একই ছোঁয়া পেয়ে ধড়মড় করে উঠে বসলাম। অন্ধকার। তবুও আমি কাউকে দেখছে পাচ্ছি। কেউ একজন আমার ঠিক সামনে পা মুড়িয়ে বসে আছে।

আমি যথেষ্ট শান্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কে?’

আমার সামনে বসা মানুষটা মুখ উঁচু করে আমার দিকে তাকাল। তারপর এক পলকে মিলিয়ে গেল!

আশ্চর্য!

আমি কি কোনো ঘোরে আছি?

মাথার ভেতরে দপদপ করছে।
ভয়ানক টনটন করছে মাথার দু'পাশের রগ।

আমি বালিশের পাশে হাত রেখে মোবাইলটাকে বরাবর জায়গায় পেলাম না। ওটা পাওয়া গেল বিপরীত পাশে। এ মুহূর্তে ফোনের ডিসপ্লে অন করলেই সময় চোখে পড়বে। আমি এখন সময় দেখতে চাইছি না।

আমি উঠে দাঁড়ালাম।

প্রচণ্ড মাথা ব্যথায় সবকিছু এলোমেলো লাগছে। ঘরের বাতি জ্বালাবার সুইচ অবধি পাচ্ছি না। টেবিলের সামনে এসে লাইটারটা হাতের কাছে পেলাম। আগুন জ্বালিয়ে সুইচ খুঁজে বের করে বাতি জ্বাললাম।

প্রথমেই মেঝেতে ছিটিয়ে পড়ে থাকা এক গাদা রক্ত চোখে পড়ল। আমি খাট থেকে নেমে যেদিকে যেদিকে গেছি, একটা মেয়ের পায়ের ছাপ মতো রক্তের ছাপ এঁকে আছে।

আমি দ্রুত আয়নার দিকে তাকালাম।

অবাক কাণ্ড!
আয়নাটা ওখানে নেই। আয়নার ফ্রেমে একটা কালো কাচ দেয়ালে আটকে আছে!

কোথাও গ্লাস খুঁজে পেলাম না। জগ থেকে গটগট করে পানি খেয়ে চেয়ারে শান্ত হয়ে বসে চোখ বন্ধ করলাম। মাথার ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। যেন ভেতর থেকে কেউ একজন টোকা দিয়ে বলছে, ‘তুই এখুনি মরে যা!’

প্রতিবিম্বTempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang