পর্ব ৫

16 4 0
                                    

রাত ২ টা ৪৪। আমি জেগে উঠে ফোন হাতে নিয়ে বসেছি। শ্বাসহীন প্রতিক্ষায় তাকিয়ে আছি মোবাইলের ডিসপ্লেতে। ৪৪ সংখ্যাটা অপলকে ৪৫ হয়ে গেল।

সময় চলতে শুরু করেছে!

আমি দ্রুত উঠে রুমের লাইট জ্বালিয়ে চারপাশে তাকালাম। সব স্বাভাবিকে ফিরে এসেছে। আমি গায়ে রেইনকোট চাপিয়ে মানিব্যাগ আর ফোন সাথে নিয়ে এক মুহূর্ত দেরী না করে বেরিয়ে এলাম। ঘরের দরজায় তালা লাগানোর মতো ধৈর্যও আমার কাছে আর অবশিষ্ট নেই।

প্রচণ্ড গতিতে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেইট টপকে বেরিয়ে এলাম। দারোয়ানকে ডেকে সময় নষ্ট করাও অসম্ভব। আমার এখান থেকে দূরে কোথাও যেতে হবে।

ঝড়ের তাণ্ডবে সোজা হেঁটে চলাও কষ্টকর হচ্ছে। রাস্তায় কোনো গাড়িঘোড়া নেই। আমি হাতে চোখ মুখ ঢেকে যত দ্রুত সম্ভব পা চালিয়ে রেলস্টেশনের দিকে যাচ্ছি। আমি জানি না সেখান থেকে কোথায় যাচ্ছি, তবে এ ঠিকানা থেকে দূরে যে কোথাও আমাকে চলে যেতে হবে।

বড় রাস্তায় আসতেই একজন রিক্সাওয়ালার দেখা পাওয়া গেল। দরদাম করা দূরে থাক, প্রায় হাতে পায়ে ধরে রিক্সায় উঠে পড়লাম আর বললাম, যত দ্রুত সম্ভব জোরে টানেন। রেলস্টেশন চলেন।

উন্মাদ বাতাস পেছন থেকে সামনে আসছে। সে বাতাসের ধাক্কায় রিক্সা যেন দ্বিগুণ গতিতে চলছে। এ গতি বেশি সময় স্থায়ী হলো না। হঠাৎ ডানে ফিরতে হওয়ায় চালক যখনই ডানে মোড় নিল, বামে আঁছড়ে পড়ে উল্টেপাল্টে গেলাম আমি, রিক্সাওয়ালা আর তার রিক্সা।

হালকা ছিলে যাওয়া ছাড়া আর তেমন কোনো ব্যাথা রিক্সাওয়ালা মামার লাগেনি। রিক্সাও ঠিক আছে। কিন্তু উনি উঠে দাঁড়াতে খুব বেশি সময় নিচ্ছেন। শুয়ে থেকে আমার দিকে এক বার তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে ও মা গো, ও মা গো করছেন!

উনাকে কিছু বলে নষ্ট করার মতো সময় আমার হাতে নেই। আমি মানিব্যাগ থেকে একটা পাঁচশ টাকার নোট বের করে উনার রিক্সার হাতলে আটকে দৌঁড়াতে লাগলাম।

প্রায় মিনিট পনেরোর মধ্যে রেলস্টেশনের পেছনের গেইটে এসে পড়েছি। টিকেট কাটার সময় এখন হাতে নেই। সামনে যে ট্রেন পাবো, তাতেই চড়ে যাবো।

প্রতিবিম্বDonde viven las historias. Descúbrelo ahora