"আমি কি হতে চাই, কি হতে চাই না এটা তোমরা কেনো বলবে?" - ১৩ বছরের শ্রাবণী চিৎকার করে উঠল।
"কারণ আমরা তোর ভালো চাই। একটা কথা মনে রাখবি, বাবা-মা কখনো সন্তানের খারাপটা চাইবে না।" - মা বলল।
চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে পাশের ঘর থেকে শ্রাবণীর বাবা আর ছোটো ভাই বের হয়ে এল। বাবা বলল,
"আহ তোমরা এটা কি শুরু করলে বলো তো? অনেক হয়েছে, এবার থামো।"
পরিস্থিতি সামলে উঠতে বেশি সময় লাগল না। বরাবরের মতো যে যার যার কাজে লেগে পরল।
এই ধরণের ঘটনা শ্রাবণীর বাসায় এখন ডেইলি রুটিনে পরিণত হয়েছে। আজকে বিকালে শ্রাবণীর মায়ের দূরসম্পর্কেরর এক বোন বেড়াতে এসেছিল। গল্পের এক ফাঁকে সে শ্রাবণীকে জিজ্ঞেস করল ও বড় হয়ে কি হতে চায়। শ্রাবণী ঝটপট উত্তর দিল যে আমি প্রফেসর হতে চাই। মিসেস শোভা অর্থাৎ শ্রাবণীর মা বলল যে, না। আমার মেয়ে ডাক্তার হবে। ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু রাতের বেলা এটা নিয়ে আবার ঝগড়া বেঁধে গেল মা-মেয়ের মধ্যে।
শ্রাবণীর আগে লেখালেখি করার অনেক শখ ছিলো। ৯ বছর থেকেই সে গল্প, কবিতা লিখত। কিন্তু পরিবার থেকে এটা নিয়ে কোনো ধরনের সাপোর্ট সে কখনো পায় নি। ৯ বছরের বাচ্চা মেয়ে পটপট করে গল্প কবিতা লিখত, এটা যেন খুব সাধারণ একটা বিষয়। খুশি হওয়া তো দূরে থাক, শ্রাবণীর বাবা-মা এটা নিয়ে খুব বিরক্ত হতো। শ্রাবণীর যখন ১১ বছর বয়স, সে একদিন স্কুল থেকে এসে দেখে মা তার লেখা সকল কিছু আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছে। ছোট মনে এত বড় একটা ধাক্কা সে নিতে পারছিল না। তার তিন বছরের সকল পরিশ্রম মা এভাবে নষ্ট করে ফেলল? কত স্বপ্ন ছিল তার লেখালেখি নিয়ে। মা এটা কিভাবে করতে পারল? মিসেস শোভা সেদিন শান্ত গলায় বলেছিল, "এসব আর চলবে না। পড়ালেখায় মন দে। তোকে ডাক্তার হতে হবে।" ডাক্তার পেশাটার উপর তখন থেকে ঘৃণা জন্মে গিয়েছিল। নিজের স্বপ্ন গুলোকে নিজের মনেই বড় করতে লাগল সে।
২ বছর পর। শ্রাবণী বড় হয়েছে এখন। দুমাস আগে ১৫ বছর পূর্ণ হলো। শ্রাবণী পড়ালেখায় অসম্ভব ভালো। কখনো ১ম ছেড়ে ২য় হয়নি।
YOU ARE READING
ছোট গল্পসমূহ
Short Storyমানুষের বাস্তব জীবনে প্রতিনিয়ত ঘটা ঘটনা গুলো এখানে তুলে ধরতে চাই। কল্পনামূলক গল্পও হয়তো থাকবে। জানিনা সফল হতে পেরেছি কিনা। আপনাদের ভাল্লাগলেই আমি নিজেকে সার্থক মনে করব :) সম্পূর্ণ নিজের মন থেকে লিখেছি। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। [ Highest ran...