আর সে তার বাবাকে অনেক ভয় পায়। রবিন বসা থেকে উঠে টেবিলের উপর থেকে এক কাপ চা নিয়ে আমির সাহেবের হাতে দিল। আর আরেক কাপ নিজের জন্য নিয়ে মোড়ায় গিয়ে বসে পড়ল। আমির সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে বলতে লাগলেন এমন কাহিনী আর চলবে না। হাত পা ছাড়া কাহিনী এর পর থেকে আর লিখবা না। এমন কাহিনী লেখো যেটার মধ্যে সত্যতা প্রকাশ পায়, যেটার সাথে মানুষ নিজেকে জুড়তে পারে। তো আপনিই বলে দেন কি কাহিনী লেখবো, বলে রবিন। সব যদি আমাকেই বলে দিতে হয় তো তোমার কি কাজ। মাস শেষে বেতন কি আমি তোমার চেহারা দেখে দেব, রাগের স্বরে কথাগুলো বলেন আমির হোসেন। বেতন মনে হয় আমার চেহারা দেখেই দেয়, আমার মেহনত নিজের নামে করে টাকা আর নাম কামায়। তার উপর আমার সাথে এমন ব্যবহার, মনে মনে কথাগুলো বলে রবিন। কিন্তু কি আর করবে সে চাইলেও চাকরিটা ছাড়তে পারবে না। রবিন চিন্তা করতে লাগল কি করা যায়, হঠাৎ ওর মাথায় মাসুমের বলা কাহিনীটা এলো। রবিন আমির সাহেবকে বলল, স্যার আমি আপনাকে একটা বাস্তব কাহিনী শোনাচ্ছি। আপনি শুনে জানান যে কাহিনীটি কেমন। যদি আপনার ভাল লাগে তাহলেই আমি সেটার উপর লিখবো। হম বলো, বলে চায়ের কাপটা টেবিলের উপর রেখে আরাম করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলেন আমির হোসেন। রবিন মাসুমের বলা কাহিনীটা আমির সাহেবকে শোনালেন। পুরোটা শুনে আমির সাহেব বললেন, আরে হ্যাঁ আট বছর আগে এমন কথা শুনেছি আমি। তখন সবার মধ্যে সেই ব্যাপারটা নিয়ে একটা আতংক ছিল। কাহিনীটা খারাপ হবে না। তো রবিন তুমি এই ব্যাপারে আরো খোঁজ খবর নাও। আর তারপর লেখা শুরু কর। ঠিকআছে স্যার, মাথা নাড়িয়ে সায় জানালো রবিন। তবে তুমি যাও, আর এ ব্যাপারে আমি যদি কিছু জানতে পারি তো তোমাকে জানাবো, বলেন আমির হোসেন। ঠিকআছে স্যার বলে সেখান থেকে চলে যায় রবিন।
পরদিন সকালে আমির হোসেন ফোন করে ডাকেন রবিনকে। না জানি আবার কি সমস্যা হলো, হয়তো এখন আবার বলবে এই কাহিনীটা পছন্দ না অন্য কাহিনী লেখো। একদিন লোকটার এক নাটক। নিজের মনেই এসব কিছু চিন্তা করতে করতে আমির সাহেবের বাসায় পৌঁছালো রবিন। রবিনকে দেখেই আমির হোসেন বললেন, কালকে যে কাহিনীর আইডিয়া তুমি দিয়ে ছিলে সেটা মোটেও খারাপ ছিল না। কালকে যে ঘটনাটা আমাকে শুনিয়ে ছিলে, একইরকম একটা ঘটনা আমেরিকার একটা জায়গায় প্রায় ৯২ বছর আগে ঘটেছিল। ২ বছর আগে আমেরিকার একটা নিউজ পেপারে এক বৃদ্ধা মহিলার ছবি দেয়া হয়। এই বৃদ্ধা নাকি সেই ঘটনার সাক্ষী। ঘটনাটা কি জিজ্ঞেস করে রবিন? সেটা তো সেই মহিলাই জানেন, পেপারে ডিটেল কিছুই ছিলো না। বুড়ি মহিলাকে পেলেই ঘটনা সম্পর্কে পুরো তথ্য পাওয়া যাবে। ৯২ বছর আগের ঘটনার সময় মহিলা উপস্থিত ছিলেন তো সেই মহিলার এখন বয়স কতো হবে, জিজ্ঞেস করে রবিন? ১০০ এর উপর তো হবেই জবাব দেয় আমির হোসেন। তো এখনো কি সেই মহিলা বেঁচে আছেন, জিজ্ঞেস করে রবিন? জানিনা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে বলেন আমির হোসেন। এই কাহিনী লেখার পর আমার চর্চা আরো বেড়ে যাবে। তো এখন মূল কথা যেটা সেটা হলো, তুমি আমেরিকায় যাবে এবং পত্রিকার ঠিকানা অনুযায়ী সেই মহিলার কাছে পৌঁছাবে। আর তার কাছ থেকে সেই ঘটনাটা কালেক্ট করবে। স্যার এটা এক শহর থেকে অন্য শহরে নয়, বরং এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে বলছেন। আর আমি আগে কখনো দেশের বাইরে যাইনি বলে রবিন। এটা কঠিন কোনো ব্যাপার না, সেখানে আমার দূর সমর্কের এক ভাতিজা আছে সে তোমার খেয়াল রাখবে। ব্যাস কয়েকটা দিনেরই তো ব্যাপার। আর তোমার যাওয়া থেকে আসা পর্যন্ত সব খরচ আমার বলেন আমির হোসেন। রবিন চিন্তা করে দেখলো এমন সুযোগ সবসময় আসে না। আমেরিকায় যাওয়া তা আবার অন্যের খরচে। ঠিকআছে আছে স্যার আমি যাবো, বলে রবিন। ওকে তোমার পাসপোর্ট দিয়ে যেও, কালকের মধ্যেই তোমার টিকিটের ব্যবস্থা করে দেব আমি বলেন আমির হোসেন।
VOUS LISEZ
রক্ত পিপাসা
Loup-garouচারিদিকে প্রচণ্ড অন্ধকার। খোলা তরবারি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রবিন। পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে রবিনের। মানুষ দুটো সময়ে কাঁপে, প্রথমত ভয় পেলে আর দ্বিতীয়ত রাগে। রবিনের মধ্যে বর্তমানে দুটোই বিদ্যমান আছে। হঠাৎ পেছন দিক থেকে আওয়াজ এলো। রবিন পেছনে ফিরে তাকাল...