💙 একাদশ পর্ব 💙

10 1 0
                                    

অর্নিশা:- কীহহহহ🥺🥺🥺!!!
বোনের কথা শুনেই অর্নিশা স্তব্ধ । কারণ ছোট থেকেই তার বোনের খুব শখ ছিলো।আর যখন মায়ের কাছে জানতে পারে যে তার যমজ বোন তার জন্মের সময় মারা গেছে,,তখন সে খুবি ব্যথিত হয়।
আর এখন যখন জানতে পারে যে অদৃশ্য হয়ে যে তার পাশে সবসময় থেকেছে, সব বিপদে অর্নিশাকে বাঁচিয়েছে! সে আর কেউ নয়, তার বোন অন্বেসা?
তাই তো অর্নিশার অন্বেসাকে অদৃশ্য হয়ে থাকলেও খুব আপন মনে হতো!! খুব #কাছের_কেউ মনে হতো তার!!!
অন্বেসা:- হ্যাঁ🙂আর আমাদের বাবার মৃত্যুটা কোনো এক্সিডেন্ট ছিলোনা!
পুরোটাই সাজানো ষড়যন্ত্র।
অর্নিশার মাথায় একের পর এক আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে। কিছুটা অতীতের রহস্য মেলাতে পারলেও তাও যেনো কিছু একটা অজানা রহস্য থেকে যাচ্ছে।
অর্নিশা:- আমাকে পুরোঘটনাটা বলোনা দয়া করে!! আমি সব জানতে চাই!!! আমি কিছু বুঝতে পারছিনা🙂
অন্বেসা বলতে শুরু করল ,,শুরু থেকে সব!!
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
20 years before

দেশের সবচেয়ে বড় বিজনেসম্যান অর্ণব চোধুরী । যার সাথে টক্কর নেওয়ার মতো কেউ ছিলোনা ।
পড়শোনা , খেলাধুলা , ব্যবসা সবকিছুতেই ছিলো পারদর্শী ।
তবে সবকিছু থাকা শর্তেও তার কষ্টের অন্ত ছিলোনা ।
কারণ এই পৃথিবীতে সে ছিলো বড় একা! মা-বাবা ছিলোনা । ছোটবেলাতেই মারা যায়। আর তারপর থেকেই অনাথ আশ্রমেই বড় হওয়া।
মা-বাবা মারা যাওয়ার পর অনাথ আশ্রমে তিন বছর অতিবাহিত হবার পর তার দাদাভাই দেশে ফিরে আর সব জানতে পারে। তাকে জানানো হয়নি কিছুই অর্ণবের ব্যাপারে আর অর্ণবের বাবার সব সম্পত্তি দখল করার স্বার্থেই সব।
দাদা দেশে ফিরে সব জানার পর অর্ণবকে নিয়ে আসেন ।
তবে তার কিছুদিন পরেই দাদাভাই ও মারা যান । তবে অর্ণবকে তার কাকারা বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারেনি । দাদা তার নামে সব সম্পত্তি লিখে যায়।
অনেক লড়াই ও সংগ্রামের পর অর্ণব ঐ জায়গায় এসে পৌঁছায়।
অর্ণবের একজন বেস্টফ্রেন্ড ছিলো। রাফসান চৌধুরী । অর্ণবের মতো পড়াশুনায় অতটা ভালো ছিলোনা । তাও অর্ণব তাকে বিজনেস পার্টনার রাখে ।
অর্ণব একজন মেয়েকে পছন্দ করতো । পরে তার সাথেই বিয়ে হয় অর্ণবের।
ছোট একটা ঘরে একটু শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলো অর্ণব । ও হ্যাঁ!! অর্ণব তার কাকাদের সাথে থাকতো না । নিজ পায়ে দাঁড়ানোর পর পর ই আলাদা থাকতে শুরু করে ।
অর্ণব চাইনি অতীতের কোনো ছাঁয়া তার উপর বা তার পরিবারের উপর পড়ুক ।
তবে ভাগ্যে যে অন্য কিছুই ছিলো🙂
অর্ণব যখন প্রথম শুনে যে সে বাবা হতে চলেছে তখন সে খুব খুশি হলেও যখন জানতে পারে তার যমজ বাচ্চা হবে তখন সে আরো খুশি হয় এবং তার স্ত্রী কে সাথে নিয়ে দুটো আংটি বানিয়ে আনে তার দুই সন্তানের জন্য।
কিন্তু পরদিন থেকেই তার জীবনের কঠিন সময় শুরু হয়।তার ব্যবসাতে ঢল নামে ।
অর্ণব ভাবতেও পারেনি তার সবচেয়ে কাছের লোক তাকে ধোঁকা দিবে। তার বন্ধু!!
পরবর্তীতে তা জানার পর সে তার স্ত্রী অর্নিশার মাকে বলে সাবধানে থাকতে । আর যদি সে না ফিরে ঘরের সিক্রেট রুমে লুকিয়ে থাকতে।
কারণ জীবনের ঝুঁকির আশঙ্কা টা অর্ণব আগেই বুঝতে পারে।অর্ণব ড্রাইভিং করে রাফসানের কাছে যাবার সময় ই বুঝতে পারে তার গাড়ি ব্রেকফেল করা।
আর অর্নিশার বাবা অর্ণবকে ও তারা মেরে ফেলে আর কার এক্সিডেন্ট টা ছিলো সাজানো ষড়যন্ত্র।
আর তারপর তখন অর্নিশার মাকেও মারতে চায় ।
গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেয় ।
এতে অর্নিশার মা মরে যায়নি ভাগ্যের জোরে। তবে অন্বেসা মারা যায়।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆●☆▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
সবটা শুনে অর্নিশা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ।
অর্নিশা:- কেন আমার জীবনটাই এমন? কেন এমন হলো? কেন এত কষ্ট আমার?
অন্বেসা:- অর্নিশা,জীবনের কোনো কষ্টকর মূহূর্তেও নিজেকে সবচেয়ে দুঃখী ভাববে না,
তোমার থেকেও কষ্টে অনেকে আছে,
তুমি তো যাও বেঁচে আছো! আর আমি!!!
আমার প্রতিশোধ নেয়া শেষ হলেই আমি চলে যাবো🙂
তবে আর কয়েকটা দিনের অপেক্ষা!!
অর্নিশা: কীসের?
অন্বেসা: আমাদের ২১ বছর পূর্ণ হওয়ার। তবেই আমি প্রতিশোধ নেবার জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত হবো।
অর্নিশা: আমি কী একবারো তোমায় দেখতে পারবোনা?
অন্বেসা : পারবে । রাতে আমি অল্প সময়ের জন্য দৃশ্যমান হবো। তখনি পারবে আমায় দেখতে।

রাতে অন্বেসা ,অর্নিশার সামনে দৃশ্যমান হলো। অর্নিশা দেখলো,
পুরো তার মতো দেখতে একটি অবয়ব তার সামনে দাঁড়িয়ে।
অর্নিশা অন্বেসা কে জড়িয়ে ধরতে চাইলো তবে পারলো না।
অন্বেসা:- পারবেনা । আমাকে ধরতে🙂
অর্নিশা: এত কষ্ট কেনো আমার? নিজের বোনকে প্রথমবার দেখছি তাও জড়িয়ে ধরতে পারছিনা!!
অন্বেসা: শান্ত হও। এটাই আমাদের ভাগ্য। কষ্ট পেয়ো না আর। তোমার কষ্টে যে আমারো অশ্রু ঝড়ে!!
অর্নিশা: হুম।
অন্বেসা: তবে সবকষ্টের মধ্যেও তোমার জন্য আনন্দ ও রয়েছে।
অর্নিশা: মানে?
অন্বেসা: তুমি কী জানো রায়হান তোমাকে ভালোবাসে?
অর্নিশা: কী!! উনি কেন আমাকে !!
অন্বেসা: হুম এটাই সত্যি! নয়তো তোমাকে বাঁচাতে যেতো না ঐদিন।

কিছুক্ষণ পর অন্বেসা অদৃশ্য হয়ে গেলো।

কিন্তু পরবর্তীতে যে আরো বড় বিপদ অপেক্ষা করছে অর্নিশার?

চলবে,
©️Written by Ashlar Anu

"অদৃশ্য আত্মা"Where stories live. Discover now