অনেকদিন পর গ্রামে যাচ্ছে অভি । বাসায় কাউকে জানায়নি, সারপ্রাইজ দেবে বলে। গ্রামে যাচ্ছে, এমনিতেই বেশ লাগছে। চারপাশের সেই পরিচিত গাছপালা দেখে নিঃশ্বাসগুলো অারো সতেজ লাগছে। সামনে নদী। নদী পার হয়ে কিছুদূর হাটলেই ওদের বাড়ি। নদী ঘাটে এসে থামতেই তাড়াহুড়ো করে ব্যাগ নিয়েই বাড়ির দিকে ছুটল ও। মাকে অাজ ভীষণ চমকে দেয়া যাবে। কিন্তু ওকেই চমকে দিলো পিচ্ছিল কাঁদা। পা পিছলে পড়ে গেল ও। অার ওমনি সুমিষ্ট একটা উচ্চশব্দের হাসি শুনতে পেল ও। লজ্জা পেয়ে ও দ্রুত বাড়ির দিকে চলে গেল।
মেয়েটি ওদের এলাকায় নতুন বাড়ি করেছে । নদী ভাঙ্গনের ফলে এখানে শিফট হয়েছে। মেয়েটি রীতিমতো দস্যু । গ্রামের ছেলেরা পর্যন্ত ওকে ভয় পায়। কারো গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাওয়া কিংবা খেজুর রস চুরি করে খাওয়া ওর নিত্যদিনের কাজ। দেখতে শ্যামবর্ণ, কিছুটা কোঁকড়ানো চুল। মস্ত মস্ত কালো চোখে না অাছে লজ্জা না অাছে ভয়। সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়ায় ও। দীর্ঘ, পুষ্ট শরীর । অার ভীষণ ছেলেমানুষ এখনো। সবাই অাদর করে পাগলী ডাকে ওকে।
বাসায় যেতেই মা শশব্যস্ত হয়ে উঠলেন। প্রথমে চমকে তারপর খুশিতে অাত্মহারা হয়ে উঠলেন। রাতে খাবার পর মা বিয়ের কথা তুললেন। "এবার তোকে বিয়ে করতেই হবে "। ও মনে মনে প্রস্তুত হয়েই ছিল এ জন্য।
"ঠিকাছে, করব। "
পরদিন সকালেই মেয়ে দেখতে যেতে হলো মায়ের চাপাচাপিতে। যে মেয়েটিকে দেখতে গেল তাকে ছাপিয়ে ওর দৃষ্টি সর্বক্ষণ অাটকে থাকল সেই কোঁকড়া চুলের মেয়েটির দিকে। মেয়েটি ওর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।অানুষ্ঠানিকতা শেষে মাকে বলল, "মা, তুমি বাসায় যাও। অামি গ্রামটা ঘুরে অাসি ।" ঘর থেকে বেরুবে এমন সময় দেখে ওর জুতো নেই। যাইহোক একটি স্যান্ডেলেরর ব্যাবস্থা হল। সেটাই পায়ে দিয়ে বেরিয়ে এল ও। কিছুদূর হাটতেই নির্জনতা ভঙ্গ করা সেই পরিচিত হাসি। ওকে দেখে হাসি পাবারই কথা। ইন করা প্যান্ট শার্টের সাথে বেমানান জুতো। মেয়েটি ওর সামনে ওর সেই জুতোজোড়া রেখেই পলায়নোদ্যত হল। ও দ্রুততার সাথে মেয়েটির হাত ধরে ফেলল মুহুর্তেই মেয়েটির মুখ লালবর্ণ ধারণ করল। লজ্জাহীন চোখে কিছুটা লজ্জা খেলা করছে । কী অপূর্ব লাগছে মুখটাকে! অভি ছেড়ে দিল ওকে। মেয়েটি একবারও পিছন না ফিরে দৌড়ে পালাল।
বাসায় ফিরতেই মায়ের প্রশ্ন, "কীরে মেয়েটাকে পছন্দ হল?"
"যেগুলেকে দেখেছি তার মধ্য একটাকে হয়েছে। "
"যেগুলো মানে??? কটা মেয়ে দেখলি তুই?"
অনেক্ষণ ইতস্ততার পর ওই মেয়েটির কথা বলল ও।