অন্ধকার রাত। চারিদিকে গভীর নিরবতা। মাঝে মাঝে রিকশার দু একটা টুংটাং শব্দ কানে ভেসে আসছে। এই গভীর রাতে ছাদে সিগারেট নিয়ে একা বসে আছে ইমতি। এর মাঝে কয়টা সিগারেট শেষ করে ফেলেছে এর সঠিক হিসেব তার জানা নেই। রাত পেরিয়ে সকাল হলেই তার বিয়ে আখি নামের মেয়েটার সাথে। আর তারপর থেকেই শুরু হবে তার অদ্রি বিহীন এক নতুন জীবন। এই ছয় টা বছর এক সাথে কাটানোর পর, তাদের বাকি জীবন টা আলাদা হয়ে কাটাতে হবে ভাবতেই ইমতির বুকের বাম পাশ টায় চিনচিন করে উঠছে। প্রতি সকালে অদ্রির ফোনে আর ঘুম ভাঙবে না তার। তখন কি আখিই তার ঘুম ভাঙাবে? কিন্তু অদ্রির মতো করে ঘুম ভাঙাতে কি সে পারবে? হয়তো পারবে বা পারবে না। কিন্তু অদ্রির জন্য ইমতির নিজের মনে যে ভালোলাগা ভালোবাসা টা রয়েছে সেটা কখনওই আখির জন্য ফিল করতে পারবে না সে। এমনকি অদ্রির জায়গায় বসাতেও পারবে না সে আখিকে। হয়তো আখির রূপ দেখে তার পুরুষত্ব জেগে উঠবে। রাতের পর রাত এই পুরুষত্বের কারণে আখির সাথে এক বিছানায় রাতও কাটাবে সে। কিন্তু ভালোবাসা টা কখনো কি তৈরি হবে? যদি নাই বা হয় তাহলে আখি কে বিয়ে করাটার অর্থ কি? যদি মেয়েটাকে ভালোবাসতেই না পারে, আপন করে নিতেই না পারে তাহলে শুধু শুধু বিয়ে নামক এক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার তো কোনো প্রশ্নই আসে না। ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো ইমতি। ঠিক তখনি তার ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকালো ইমতি। স্কিনে আখির নাম ভেসে উঠেছে দেখে কিছু টা বিরক্ত হলো ইমতি। এত রাতে মেয়েটা কেন ফোন দিচ্ছে!
দুই বার ইমতির ফোনে কল করলো আখি। কিন্তু ওদিক থেকে ইমতির কোনো সাড়া না পেয়ে তৃতীয় বার কল করবে কি না এটা নিয়ে কিছু সময় চিন্তা করতে লাগলো আখি। ইমতি কি ঘুমিয়ে পড়েছে? টায়ার্ড হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে হয়তো। আচ্ছা, ইমতির ঘুমন্ত মুখ টা দেখতে কি খুব মায়াবি? খুব বেশি দেখতে ইচ্ছে করছে ঘুমন্ত ইমতি কে। অবশ্য কাল এই সময় তো ইমতির বাহুডোরেই আবদ্ধ থাকবে। ইমতি কি কাল রাতে তাকে এই সময় ঘুমুতে দিবে? দরকার নেই ঘুম! ইমতি পাশে থাকলে আর কিচ্ছু চাই না তার। ভেবেই নিজের আনমনে কিছুক্ষণ হাসলো আখি। এরপর এক মুহূর্ত কল দেবার ইচ্ছা টা দাবিয়ে রাখলেও পরমুহূর্তেই আবার কল দিল সে ইমতির নাম্বারে।