401 18 1
                                    


সকালে ঘুম ভেঙেই দেখি প্রচন্ড মাথাব্যথা। রাতে যখন ঘুমিয়েছিলাম, তখন তো তেমন একটা মাথাব্যথা ছিল না। অথচ ঘুম ভাঙলে কেন মাথা ব্যথা করবে? শুয়ে শুয়ে নিজের মাথা নিজেই টিপলাম কিছুক্ষণ। এরপর উঠে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে আয়নার দিকে তাকালাম। চুল গুলো কাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে। ছোটবেলা থেকেই আমার বড় চুল বিরক্ত লাগে। অন্যান্য মেয়েরা যেমন চুল বড় করে বেণী করে রাখে, আমার তেমনটা করতে বিরক্ত বোধ হয়। এ কারণে চুল আমার লম্বায় ঘাড় ছাড়াতে পারেনি সহজে। আমি মাথাব্যথা নিয়েই নাশতার টেবিলে গেলাম। আমাদের ঘরের কাজের সহকারী এসে টেবিলে আমার নাস্তা দিয়ে গেল- ডিম পোচ আর পরোটা। আমি মাথা তুলে তার দিকে তাকালাম।
"মা কোথায়?"
"ম্যাডাম তো সকাল সকাল বের হয়ে গেলেন, বললেন মিটিং আছে"
"ওহ। এক মগ চা দিও তো, মাথাব্যথা করতেছে"

আমার মা তার অফিস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমাদের পারিবারিক ব্যবসা আছে। বাবা সিংগাপুর, থাইল্যান্ডের দিক সামলায়, মা এই দেশেরটা। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেই আমরা বাইরে ট্যুর দেই। একা নাস্তা করছি বলে ভাববেন আমি বাবা মায়ের অনাদরে ঘরে একা একা থেকে বড় হয়েছি! বাবা মা ব্যবসার ফাঁকে আমাকে যথেষ্ট সময় দেন। তাছাড়া আমার চাচা, তিন মামা এই এলাকাতেই থাকে। একা ভালো না লাগলে সেখানে চলে যাই। চাচার বাড়িতে কম যাই কারণ আপু ভাইয়া সবাই ব্যস্ত থাকে। বেশিরভাগ সময় মামা বাড়ি চলে যাই কারণ তারা তিনজন এক বিল্ডিংয়ে থাকে। সেখানে সারাদিন হৈচৈ লেগে থাকে। ভালো না লাগলে সেখান থেকে একটু আনন্দ করে আসি। তবে আজকে কোথাও যেতে ইচ্ছা করছে না। ভার্সিটিতে আজ প্রথম ক্লাস, তবুও যাবো কিনা ভাবছি। মাথাব্যথায় মনে হচ্ছে না সেখানে যেতে পারব। অগত্যা বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম।

আমার এই মাথাব্যথার নাম মাইগ্রেন। মাথাব্যথায় কয়েকবার নাক মুখ দিয়ে রক্তও এসে পড়েছিল। আমি অবশ্য সেসবে বিচলিত হইনি। মেয় হিসেবে আমি খুব শক্ত। অবশ্যই আর সব মেয়েদের মত আমার ভেতর অজস্র আবেগ খেলা করে, রাগ হয়, কান্না পায়, হাসি আসে। হরমোনের লাফালাফি জনিত কারণে আমিও মুড সুইং এ ভুগি। তবে আমি কান্না আর ভয় কারো সামনে সহজে প্রকাশ করিনা। রাগ, হাসি, বিরক্তি- এসব অনুভূতির ক্ষেত্রে রাখঢাক থাকলেও নিজের দুর্বলতা প্রকাশ পায়, এমন অনুভূতির প্রতি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে।

শুভ বিবাহWhere stories live. Discover now