৩২

166 13 5
                                    


একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছি। অস্থির ভঙ্গিতে বারবার সামনের ড্রিংকে চুমুক দিচ্ছি। বাইরে ভীষণ গরম পড়েছে। এখন যদিও বর্ষাকাল, তবুও সুযোগ পেলে সূর্যের তাপে চামড়া পোড়ায় আর ঘামে ঘামে শার্টে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এখানে এসি চলছে, তবুও ঘামছি। কারণ সাড়ে চার বছর পর কণার মুখোমুখি হচ্ছি। শেষ যখন ওকে দেখেছিলাম, তখন বিছরি একটা কান্ডের জন্ম দিয়েছি। তারপর ওকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছি। সেই ভাঙা চোড়া মেয়েটা এখন কেমন হয়েছে জানি না। আজকে এখানে হয়ত সে একটা সিন ক্রিয়েটও করতে পারে। আমি নিশ্চিত না। এজন্য ঘামছি। এক সময় কণার নাটাই আমার হাতে ছিল। ইচ্ছেমতো নাটাই ধরে ঘুড়ি উড়িয়েছি। যদি দুঃস্বপ্নেও বুঝতাম যে আজকের দিনটা আসবে, তাহলে কিছুটা হলেও সংযত হতাম।

কিছুক্ষণের মাঝে আমার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে আমার দিকে আগাতে দেখলাম। চোখে কমলা রঙের রোদচশমা, কাঁধ ছোঁয়া স্ট্রেইট চুল, ফুল হাতা টপ আর জিন্স পরে খট খট করে সে এদিকে এগিয়ে আসছে। ওকে দেখে আমি উঠে দাঁড়ালাম। অকারণে হাত দিয়ে শার্ট ঠিক করার চেষ্টা করলাম। কলারে হাত দিয়ে সেটা ঠিক আছে কিনা দেখলাম। তারপর নার্ভাসনেস কাটাতে ওর দিকে চেয়ে হাসলাম। কণা অবশ্য আমাকে দেখে হাসলো না। আবার রাগও দেখাচ্ছে না। খুব স্বাভাবিক মুখভঙ্গি তার, যেন আমার উপস্থিতিতে তার কোনো আসে যায় না। আমি সামনে বসতে ইশারা করলাম,
❝কেমন আছো?❞

কণা মুচকি হাসলো। চশমা খুলে বসতে বসতে আমাকে ভালোভাবে পরখ করে বলল,
❝ভালোই তো আছি! তুমি তো বোধহয় ভালো নেই❞
আমি ম্লান হাসলাম। বেশ কিছু মাস ধরে তুতুনের সাথে যোগাযোগ এর চেষ্টা করেছি, লাভ হয়নি। মেয়েটা আমাকে ভালোভাবে ইগ্নোর করেছে। শেষ বার আমাকে অপমানও করেছে। আগে কখনো মেয়েদের কথা গায়ে মাখতাম না। কেন যেন তুতুনের কথাগুলো খুব গায়ে লাগলো। তখন থেকে আরও পাগল পাগল লাগছে। আমি যে মেয়েটাকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি, তা প্রতি মুহূর্তে টের পাচ্ছি। ওর জন্য যেকোনো কিছু করা সম্ভব। আর এজন্যই কণার কাছে আসা। তুতুন আমাকে বলেছে, কণার কাছে গিয়ে যেন আগে মাফ চাই। এরপরও ও রাজী হবে কিনা জানি না, তবুও এসেছি মাফ চাইতে।

শুভ বিবাহOù les histoires vivent. Découvrez maintenant