দ্বিতীয়াংশ

81 4 0
                                    


সেদিন রাতে ডিনারের সময় প্রথম সভ্যর সঙ্গে আমার দেখা হল। আর এবার আমি হা করে সভ্যর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

প্রথমবারের মতো আমি সভ্যকে ভালোভাবে খেয়াল করলাম। তখন সভ্যর মুখে কোন কেক ছিল না। গৌরবর্ণের লম্বাটে মুখ, চোখ জোড়া বড় বড়, ঠোঁট জোড়া টকটকে লাল রংয়ের আর মাথা ভর্তি কালো কুচকুচে ঝাঁকড়া চুল!

এ যে অসম্ভব সুন্দর এক কিশোর! প্রথম দেখায় যেকোন কিশোরীর বুকের ভেতর কেঁপে উঠবে..!

এই যে যেখানে আমার বুকের ভেতর কেঁপে ওঠার মতো অবস্থা! সেখানে অসভ্যটা একবারও আমার দিকে তাকায়নি!

খাওয়ার সময় জানতে পারলাম বিকালে সভ্য ওর বন্ধুদের নিয়ে বাসায় আড্ডা দিচ্ছিলো। ক্যাডেটের পরিক্ষার রেজাল্ট বের হয়েছে। সভ্য ভাইবাতেও টিকে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই ক্যাডেটে চলে যাবে।

এটা শুনেই আমি মনে মনে উড়তে শুরু করলাম। কি মজা ও চলে যাচ্ছে! মন চাচ্ছে হারমোনিয়ামটা বাজিয়ে গাওয়া শুরু করি,
‘‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
শাখে শাখে পাখি ডাকে
কত শোভা চারি পাশে..
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে... ’’

সভ্যর সিসিআর - এ হয়ে গেলো। সভ্য যেদিন চলে যায় সেদিন প্রথম ও আমার রুমে এসেছিল। আমার হাতে একটা চিরকুট দিয়ে আমি কিছু বলার আগেই ও আমার রুম থেকে চলে যায়। নিচে ওর জন্য গাড়ি অপেক্ষা করছিল। আমি চিরকুট পড়ে ওটা হাতে নিয়েই দৌড়ে নিচে যাই। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। সভ্য চলে গেছে।

--‘‘তুমি আমার জন্য বাড়ি ছেড়েছিলে তাই না? আ'ম স্যরি! দেখো আমি চলে যাচ্ছি প্লিজ তুমি আর কোথাও যেয়ো না। তুমি না থাকলে বড়মা,বড়বাবা অনেক কষ্ট পায়।’’--

চিরকুটে মাত্র কয়েকটা লাইন লেখা। চিরকুট পড়ার পর থেকে আমি জানি না কেনো যেন আমি ভিতরে ভিতরে একটা চাপা কষ্ট অনুভব করছিলাম। বাচ্চা একটা ছেলে আমার জন্য আপনজনদের ছেড়ে দূরে থাকবে !

এরপর ছুটিতে সভ্য বাসায় এলেও তেমন কোন কথা হয়নি। বাসায় ও ওর মতো আর আমি আমার মতো। অথচ আমাদের রুম পাশাপাশি। ওর আর আমার একই বারান্দা !

সভ্যতার সভ্য ( Sovvotar Sovvo)Where stories live. Discover now