নওরিনের বিপদ

262 8 0
                                    

নওরিনের শরীরটা জ্বলে উঠলো রাগে । ইচ্ছে করলো বেটাকে ফোনের ভেতরে ঢুকে একটা চড় মেড়ে আছে । রাগ আটকে কোন মতে বলল, আপনি তো আচ্ছা বদমাইশ ! ছেলে হয়ে মেয়ে রুমমেট খুজছেন ?

ওপাশ থেকে যে ফোন ধরেছিল সে খানিকটা সময় চুপ করে রইলো । তারপর শান্ত কন্ঠে বলল, টু লেটে কি কোথাও লেখা যে যে টুলেট দাতা মেয়ে ? আছে কি?

স্কিনের দিকে তাকিয়েই আছে নওরিন । সেখানে সত্যিই কোথাও এমন কিছু লেখা নেই । কেবল লেখা যে এক রুম ভাড়া হবে । চাকুরীজীবী মেয়ে ! নিচে একটা ঠিকানা আর ফোন নম্বর !

ওপাশ থেকে আবারও ছেলেটার কন্ঠসৃ শোনা গেল । সে বলল, শুনুন, ইচ্ছে হলে থাকবেন নয়তো থাকবেন না । এতো কথা বলার দরকার কি ! আর আমি আপনার সাথে রুমে থাকবো না । পুরো ফ্ল্যাটে চারটা রুম ! আপনাকে আলাদা একটা রুম দেওয়া হবে । আপনি থাকবেন আপনার মত ! অন্য রুমে কে থাকলো সেটা আপনার দেখা কি দরকার !

ফোনের লাইন টা কেটে গেল । নওরিন ফোন রেখে কিছু সময় চুপ করে বসে রইলো । কদিন থেকে সময়টা ওর ভাল যাচ্ছে না মোটেও । সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে একটা নতুন বাসা ঠিক করতেই হবে ওকে । কোন ভাবেই আর টেকা যাচ্ছে না । বাড়িওয়ালা একেবারে পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে এই মাসের ভেতরেই ঘর ছেড়ে দিতে হবে । নয়তো তিনি নিজে তাকে বাসা থেকে বের করে দিবে । অবশ্য নওরিন জানে যে বাড়িওয়ালাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই । প্রতিদিন একই ঝামেলা কে সহ্য করে । নওরিনই যেখানে সব ঝামেলার মুল তাই নওরিনকেই বিদায় করে দিবে । এটাই সহজ সমাধান ।

নওরিন টুলেট গ্রুপে আরও ভাড়ার জন্য দেখতে শুরু করলো । কিন্তু একটাও মনের মত কিছু পেল না । কয়েকটা পেল সে গুলো ওর অফিস থেকে অনেক দুরে । অনেক বেশি কষ্ট হয়ে যাবে । আরও দুইদিন এভাবে কেটে গেল । দুই তিন টা সাবলেট দেখতেও গেল কিন্তু কোনটাই মন ভরলো না । ঐ সব স্থানে নওরিন থাকতে পারবে না । কোন ভাবেই সে হোস্টেলে উঠতে চাচ্ছে না । হোস্টেলের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারবে না সে । এখন কী করবে ? তখন আবারও সেই আগের রুমটার কথা মনে হল ।

আচ্ছা একবার কি দেখে আসবে রুমটা ! ঠিকানা টা তো একদম কাছেই অফিসের । একবার দেখে আসতে তো কোন দোষ নেই । যে এলাকার ঠিকানা দেওয়া সেটা সম্ভ্রান্ত এলাকা । এই অফিসের কাছে যার ফ্লাট রয়েছে সে নিশ্চিত ভাবে যেন তেন মানুষ হবে না । একবার ঘরটা দেখে আসতে তো দোষ নেই ।

অপুর গল্প (ভলিউম ০৪)Onde histórias criam vida. Descubra agora