দৃশ্য : ছয়

182 0 0
                                    

দৃশ্য একের পুনরাবৃত্তি

শোভন মোটর সাইকেল নিয়ে বের হবে। কিছুদূর গিয়ে মোটর সাইকেলের গতিপথ পাল্টে ফেলবে।

কিছুক্ষণ উদ্দেশ্যহীনভাবে চালিয়ে। মুন্সীর ওয়ার্কশপে পৌঁছাবে।

শোভন(মুন্সীকে দেখে) : স্লামালিকুম মুন্সী ভাই।

মুন্সী : শোভন ভাই! আছেন কেমুন?

শোভন : বিপদে ছিলামরে ভাই। যাক এখন আমি মুক্ত পাখির মতো... হা হা হা

মুন্সী : সেই যে চাকুরীতে ঢুকলেন, আর দেখা নেই।

শোভন : আর চিন্তা নেই। এখন আমি free as a bird আর আপনাদের ছেড়ে যাচ্ছি না। চাকরিটা ছেড়ে দিলাম।

মুন্সী : বলেন কি? কবে?

শোভন : আজকেই। কৈ রহমত মিয়া। আছ তাহলে

রহমত ( চা দোকানদার, দূর থেকে চিৎকার করে): শোভন ভাই ভাল আছেন? আমরা কৈ যামু।

শোভন : আর কোথাও গিয়ে কাজ নেই আমিই এসে পড়েছি। আর কোথাও যাচ্ছি না তোমাদের ছেড়ে। এমন সুন্দর সকাল কি আর কোথাও পাওয়া যায় মুন্সী! কত দিন আড্ডা দিছি আপনার ওয়ার্কশপে। মনে পড়লো সবকিছু। ছেড়ে দিলাম চাকরী বাকরি।

মুন্সী ( কিছুটা চিন্তিত হয়ে আবার আগে মেজাজে ফিরে যাবে): কোন সমস্যা নেই শোভন ভাই। আবার আড্ডা জমিয়ে ফেলবো। তা অনিক, রিপন, আসাদ ভাইয়ের খবর কী?

শোভন : ঐ হালার পুতে গো কথা বাদ মুন্সী। সকালে অফিসে ঢোকে, রাতে নাক ডেকে ঘুমায় আবার সকালে অফিসে আমি আর এ সবের মধ্যে নাই। জীবনটা ত্যানাতেনা হয়ে গেছে।

মুন্সী : তা ওয়ার্কশপে যখন এসেছেন। বাইকের সমস্যা কী?

শোভন ( একটু ভেবে নিয়ে) : সমস্যা। তা সমস্যা একটা বিরাট আছে। বাইকে জিনের আছর লাগছে।

মুন্সী : বলেন কী?

শোভন : শুধু তাই না, সকাল ন'টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত আছর থাকে। খুবই অদ্ভুত।

মুন্সী: অদ্ভুত। অদ্ভুত। খুলে বলেন।

শোভন : সকাল ৯টার পর থেকে ব্রেকটা ডান দিকে মুভ করে। মনে হয় এই বুঝি বাসের নিচে ঢুকে গেল।

মুন্সী : কৈ দেখি দেখি।

মুন্সী বাইক নিয়ে এক চক্কর দিবে।

শোভন : সাবধানে মুন্সী ভাই। ধরতে পেড়েছেন। ডানে ঘুরছে না? খুবই ভয়াবহ ব্যাপার।

মুন্সী (ইতস্তত কর) : তাই তো মনে হচ্ছে। ভাবনার বিষয়।

শোভন ( হঠাৎ কিশোরকে খেয়াল করবে। কিশোর মুন্সীর দোকানে কাজ করে। একটা বাইক নিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে। ) : আরে কিশোর চুপচাপ যে। সে হ্যালো।

কিশোর : হ্যালো

মুন্সী চিন্তিত মুখে রহমতের দোকানে যাবে। নিচু গলায় বলবে...

মুন্সী : কোথাও ঝামেলা হয়ে গেছে রহমত। কোনদিন শুনছ বাইকে জিনে আছর করছে!

রহমত কাজের ব্যস্ততায় মুখে বিস্মিতভাব ফুটিয়ে তুলবে।

(ফেইড আউট)

শোভন কিশোরের সাথে আলাপ করছে। মুন্সী ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে।

মুন্সী : এসে যখন পড়েছেন। আমাদের সাথে থেকে যান। একেবারে ম্যানেজার পোস্ট। খালি দেখভাল করবেন। কোন কাম কাইজ নাই।

শোভন : আমিও সেটাই বলতে চাচ্ছিলাম। ওয়ার্কশপের কাজ খুবই পছন্দের কাজ। কত রকম মানুষ। ধাতব শব্দ। তবে একটা ব্যাপারে আমার আপত্তি আছে। ম্যানেজার পোস্টের কোন মানেই হয় না। কাজটা আমি শিখে ফেলতে চাই। ফবাবষড়ঢ়সবহঃ ভৎড়স নবষড়ি ।

মুন্সী ( একটু চিন্তা করে) : ঠিক আছে। সেটাও সমস্যা নয়। তবে কিশোরের এসিস্টেন্ট হিসাবেই শুরু করুন। আজ থেকে?

শোভন : এখন থেকে।

মন্সী : এখন থেকে!

শোভন : এখন থেকে।

মুন্সী কিশোরকে ডাক দিয়ে শোভনকে সেট করাবে। স্যুট টাই খুলে পুরোনো ওয়ার্কশপের ড্রেস পরবে।


ত্র্যহস্পর্শWhere stories live. Discover now