অদ্ভুত শব্দটা যে একটা পাখির ডাক, সেটা বুঝতে সময় লাগল ওদের। মাত্রাতিরিক্ত তীক্ষ্ণ ডাকটার সাথে যেন হাহাকার মিশে আছে। পাখিটা ডেকেই যাচ্ছিল, ডেকেই যাচ্ছিল।
দুইজন দুইজনের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই দুখী দুখী হয়ে উঠল মায়ূমীর চোখ।“নিশ্চয়ই ওই মা পাখিটা। ফিরে এসে বাসার অবস্থা দেখে এভাবে চিৎকার করছে”
“তাই হবে হয়তো। চলো দেখি, বাসাটা কোনভাবে তুলে দেয়া যায় কী না” উঠে দাঁড়াল যিয়াদ।
দেখা গেল ওদের ধারণা ঠিক। গাছটার উপর দিয়ে বেশ বড়সড় একটা পাখি চক্কর দিচ্ছে আর এমন শব্দ করছে। ওদের দেখে চিৎকার থামাল পাখিটা, কিন্তু চক্কর দেয়া বন্ধ করল না, শুধু একটু নিচে নেমে এল। যেন বোঝার চেষ্টা করছিল ওদের মতলব টা কী। যিয়াদ দেখল ওর হাতের নাগালে একটা ডাল আছে, সেখানে পাখির বাসাটা উঠিয়ে দেয়া সম্ভব। যদিও মনে হয় না পাখিটা এত নিচু ডালে বাসা বেঁধেছিল। কিন্তু বাসাটা তোলার জন্য নিচু হতেই বাঁধল বিপত্তি। তীরের বেগে ছুটে এসে পাখিটা ঠোকর দিতে চাইল যিয়াদকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে “যিয়া.....দ” বলে ধাক্কা দিয়ে মায়ূমী ওকে সরিয়ে দিল বলে বেঁচে গেল পাখিটার ধারাল চঞ্চুর হাত থেকে।
“ও ভাবছে আমরা ডিমগুলো নিতে এসেছি” বলল যিয়াদ।
ঘাড় নেড়ে সায় দিল মায়ূমী। ওর চোখেমুখে ভয়ের চিহ্ন। পাখিটা এখন একেবারে ওদের মাথার উপরেই ডানা ঝাপটাচ্ছে, যেকোনো সময় আঘাত হানতে প্রস্তুত। ভিন্ন এক সুরে ডাক শুরু করেছে এবার।
“দেখো, আমরা তোমার বন্ধু। আমাদের কোন খারাপ উদ্দেশ্য নেই। আমরা তোমার ডিম নিতে আসিনি, বাসাটা উঠাতে তোমাকে সাহায্য করতে এসেছি” কাঁপা কণ্ঠে কথাগুলো বলল মায়ূমী পাখিটার দিকে তাকিয়, হাত নেড়ে অভিনয় করে।
কিন্তু পাখি কী আর মানুষের কথা বোঝে! যিয়াদ আবার নিচু হতে গেলে একইভাবে ধেয়ে এল পাখিটা। এবার সতর্ক ছিল যিয়াদ, সরে গেল দ্রুত।
“যিয়াদ, ডিমগুলো ফিরিয়ে দিব নাকি? ও তো দেখছে ওর দুইটা ডিম মিসিং” ফিসফিস করল মায়ূমী।
YOU ARE READING
ঊর্ণাজাল
General Fictionযুবক বাংলাদেশী, যুবতী আমেরিকান। একজন মুসলিম, অন্যজন খ্রিস্টান। কী হবে, যখন তারা আটকে পড়বে আটলান্টিকের বুকে জনমানবহীন ছোট্ট এক দ্বীপে?