মায়ূমীর কান্না থামা কিংবা সন্ধ্যা নামার অপেক্ষায় অহেতুক বসে ছিল না যিয়াদ। রাত নেমে গেলে জঙ্গলে ঢুকতে আর ইচ্ছে করবে না। তাই সেই ফাঁকে জুকিনির ঝোপের জায়গাটা থেকে এক চক্কর মেরে এসেছিল। জ্যাকেটের দুই পকেটে দুটো জুকিনি পুরে এনেছিল রাতের সংস্থান হিসেবে। সেগুলো দিয়েই এখন ডিনার করছে ওরা।
মায়ূমী সাধ্যের অতীত চেষ্টা করছে নিজের স্বভাবচিত খোশ মেজাজে থাকার। যার শুরু হয়েছে আগুন জ্বালানো নিয়ে।
“একদিন একা একা আগুন জ্বালিয়েই আমি এক্সপার্ট হয়ে গেছি। বিশ্বাস হচ্ছে না? দেখাচ্ছি দাঁড়াও” প্রয়োজনের থেকে বেশি ছুটোছুটি করে আগেরদিন যিয়াদের যোগাড় করে রাখা গাছের ডাল আনল, সাজাল, আগুন জ্বালাল। পুরোটা সময় জ্বলন্ত ডালটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো যিয়াদকে। কয়েকটা বড় ডালে আগুন ধরে আলো বাড়লে আলোকিত হয়ে উঠলো চালাঘরটা। সেদিকে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠল মায়ূমী।
“হোয়া!” ঘরটার চারদিকে এক পাক ঘুরে, ভেতরে একটা ঢুঁ মেরে, নাচতে নাচতে আবার ছুটে এল ও যিয়াদের কাছে। “ওয়াও! কী বানিয়েছো রুডম্যান! জাস্ট অসাম!”“থ্যাংকস ফর দ্য কমপ্লিমেন্ট। যদিও এভাবে বলার মতো কিছু হয়নি” মায়ূমীর অতি উচ্ছ্বাস যিয়াদের ভালো লাগছিল না।
“এভাবে বলার মতো কিছু হয়নি” নাকি কণ্ঠে ওকে নকল করল মায়ূমী, “বলেছে তোমাকে” একটু থেমে আবার মুখ খুলল ও, “শোনো, আজকে তুমি ভেতরে ঘুমাও। আমি এখানে ঘুমাব”
“তোমার ঘর, তোমার পছন্দ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। সেখানে আমাকে কেন পাঠাতে চাইছ?”
“না না। আমি রোজ রোজ ঘরে ঘুমাব আর তুমি বাইরে। এটা তো হতে পারে না, তাইনা?”
“রোজ রোজ কই? কাল রাতে তো তুমিও খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছ” মুচকি হেসে বলল যিয়াদ।“আরে হ্যাঁ, তুমি তো কালকে ঘরে ঘুমাতে পেয়েছিলে। ঠিক আছে, আমিই ঘুমাব আমার ঘরে। কিন্তু, আমি, মায়ূমী ইশিকাওয়া উইলিয়ামসন, কালকে তোমার ঘর বানিয়ে দিব, প্রমিস” বুকে হাত দিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে শপথ গ্রহণের মতো সুর করে বলল মায়ূমী।
ESTÁS LEYENDO
ঊর্ণাজাল
Ficción Generalযুবক বাংলাদেশী, যুবতী আমেরিকান। একজন মুসলিম, অন্যজন খ্রিস্টান। কী হবে, যখন তারা আটকে পড়বে আটলান্টিকের বুকে জনমানবহীন ছোট্ট এক দ্বীপে?