পর্ব - ১১

118 6 3
                                    

"আমি এদিকে আরও দুটো ডাল পুঁততে চাই" খুঁটি হিসেবে চারটা ডাল পোঁতা হলে বলল যিয়াদ।

"কেন?" অবাক হলো মায়ূমী।

"ভেতরের দিকে কিছু শুকনো কাঠ রাখার জন্য। কালকে বিকেলের দিকে আকাশ একবার কালো হয়ে গিয়েছিল খেয়াল করেছিলে? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে বৃষ্টি হবে। আলহামদুলিল্লাহ, একটু বাদেই সরে গিয়েছিল মেঘটা। কিন্তু ভেবে দেখো, সব কাঠ ভিজে গেলে আমরা আগুন জ্বালাব কীভাবে?"

"ভালো কথা বলেছো তো! আমি তো ভাবিইনি"

এদিকে আজকের আকাশেও যে সূর্যের তেজ কম, একটু পর পরই তিনি নতুন বউয়ের মত মেঘের ঘোমটায় মুখ লোকাচ্ছেন, সেটা ওরা খেয়ালই করলনা।

"কিন্তু আমার মাথায় অন্য বুদ্ধি এসেছে" কথাটা যোগ করল মায়ূমী।

"কী বুদ্ধি?"

"ঘর বড় না করে ওইখানে রাখলে কেমন হয়?" পাহাড়ের গোড়ায় একটা ঈষৎ ঢুকে যাওয়া অংশের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করল মায়ূমী। এখানে যেদিন ওরা প্রথম ঘরটা বানিয়েছিল, সেদিনই যায়গাটা চোখে পড়েছিল ওদের। মায়ূমী তো একটু আফসোসই করেছিল যে, যায়গাটা আরেকটু গভীর আর উঁচু কেন নয়? তাহলেই রবিনসন ক্রুসোর মতো গুহায় বাস করতে পারত।

সেদিক তাকিয়ে যিয়াদ দেখল মায়ূমী আসলেই বুদ্ধিটা দারুণ দিয়েছে। জায়গাটা মানুষের থাকার মতো না হলেও কাঠ রাখার জন্য একেবারে পার্ফেক্ট। একে তো বৃষ্টির ফোঁটা থেকে বেঁচে যাবে, তার উপর নিচ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে ভেজারও কোন সুযোগ নেই। পাহাড়ের গোড়া থেকে সৈকত ঢালু হয়ে নেমে গেছে সমুদ্রের বুকে।

"গ্রেট আইডিয়া, মায়ূমী" প্রশংসা না করে পারল না যিয়াদ।

ওদের কথা চালাচালির ফাঁকে কখন মন খারাপ করা কালো মেঘের দল এসে মাথার উপর জড়ো হয়ে গেছে, বুঝতেই পারেনি ওরা। দিনের আলো হারিয়ে সাঁঝ নেমে এল মুহূর্তেই।

"যাব্বাবা! বলতে না বলতেই!" হতভম্ব গলায় বলল যিয়াদ।

প্রায় সাথে সাথেই বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করল। দু'জনে চট করে ঢুকে গেল মায়ূমীর চালাঘরের তলায়।

ঊর্ণাজালDonde viven las historias. Descúbrelo ahora